ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চীনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
চীনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী

ঢাকা: দ্য ইকোনোমিস্টের ‘দ্য ফিউচার অব চাইনিজ ইনভেস্টরস’ শিরোনামে প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মহাপরিচালক শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেছেন, যেসব দেশে ঝুঁকি কম এবং সুবিধা বেশি, এমন দেশের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ‘স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন উইথ চাইনিজ ইনভেস্টরস: চ্যালেঞ্জেস, এক্সপেকটেশনস অ্যান্ড প্রসপেক্টস’ শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাস ও বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) এই সেমিনারের আয়োজন করে।

শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, চীনের বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫২তম। এতেই প্রমাণিত হয়, চীনের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে এক ডলার বিনিয়োগ করলে ১৬ ডলার রিটার্ন পাওয়া যায়।

সেমিনারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহ মোহাম্মদ মাহবুব। এতে তিনি বলেন, কোনো একটি দেশে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, কর অব্যাহতি সুবিধা ও অন্যান্য সুবিধা, যার সবকিছু বাংলাদেশে রয়েছে। ২০৪০ সালে উন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে ৬০৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগের ৭০ দশমিক ৪২ রিইনভেস্টমেন্ট। অর্থাৎ, এখানে যেসব বিদেশি উদ্যোক্তারা ব্যবসা করছেন, তারা মুনাফা করায় আবার পুনঃবিনিয়োগ করছেন। জেট্রো’র স্টাডির কথা তুলে ধরে প্রবন্ধে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় এবছর প্রফিটিবিলিটি ফোরকাস্ট, বিজনেস কনফিডেন্স ফোরকাস্ট বেড়েছে এবং লস মেকিং ফোরকাস্ট কমেছে।

বাংলাদেশে অ্যাগ্রো প্রসেসিং অ্যান্ড মেশিনারি, তৈরি পোশাক শিল্পের হাই-এন্ড প্রোডাক্ট, রিসাইক্লিং অ্যান্ড সার্কুলার ফ্যাশনস, মেন মেইড ফেব্রিক, আইটি, হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস, অটোমোবাইল অ্যান্ড পার্টস, ব্লু ইকোনমি, হসপিটিলিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম এবং চামড়া শিল্পে বিনিয়োগ করতে চাইনিজ উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়েছে বিডা।

বিসিসিসিআই-এর সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা বলেন, ২০১৯ সাল পর্যন্ত চীন বাংলাদেশে একক সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী ছিল। কোভিড ও চীনের জিরো কোভিড নীতির কারণে কয়েকবছর চীনা বিনিয়োগ কম এসেছে। তবে এখন অনেক বিনিয়োগ আসছে। চীনা বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদ্যমান রিজার্ভ সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে।

বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে চীনা কোম্পানিগুলো প্রশংসার দাবিদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১৪০ কোটি ডলার, যা বর্তমাসে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। ২০১৬  সালে, বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এর অংশ হিসাবে বাংলাদেশকে ৪০০০ কোটি ডলারেরও বেশি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার বিতরণ করা হয়েছে এবং অনেক প্রকল্প ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে, কিছু মাইলফলক প্রকল্প উদ্বোধন হতে চলেছে এবং কিছু প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিডার নির্বাহী সদস্য অভিজিত চৌধুরী, এনবিআরের কাস্টমস ভ্যালুয়েশন অ্যান্ড রিওয়ার্ড এর ফাস্ট সেক্রেটারি খন্দকার নজরুল, বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মরতুজা বাংলাদেশ ব্যাংকের জয়েন্ট ডিরেক্টর আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৩
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।