ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

তালা ভেঙে মার্কেটে প্রবেশ করতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
তালা ভেঙে মার্কেটে প্রবেশ করতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে

ঢাকা: ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস এন্ড ম্যানটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে মার্কেটের নিরাপত্তা রক্ষীদেরও খুঁজে পাননি।

একপর্যায়ে তালা ও গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আগুন নিয়ন্ত্রণের পর এ তথ্য জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম ।

তাজুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকা ও মানুষের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট আগুনের খবর পেয়ে ৯ মিনিটের মাথায় আমরা এখানে চলে আসি। রাত তিনটা ৫২ থেকে আমরা এখানে আগুন নির্বাপণের চেষ্টা করি। সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। ১৭টি ইউনিটে ১৫০ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করেছেন।  

ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী-নৌবাহিনীর সদস্যরাও সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, এই মার্কেটটিতে বারংবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করা হয়েছে। কিন্তু সেভাবে তারা সাড়া দেননি। এই মার্কেটটা কিছুটা বঙ্গবাজার টাইপের। এখানে ভেতরে অনেক ছোট ছোট গলি ছিল, যেগুলো পুরোটাই বিভিন্ন মালামালে দিয়ে গাদাগাদি করে রাস্তা বন্ধ ছিল। পুরো মার্কেট টাইট কলাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো ছিল।

তিনি আরো বলেন, এখানকার নাইট গার্ড যারা ছিলেন তারা বাইরে ছিলেন। তাদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি তেমন একটা। ভেতরে ফায়ার ফাইটারদের প্রবেশ করতে বেগ পেতে হয়েছে। তালা ভেঙে এবং কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি।

তিনি বলেন, এ মার্কেটের বাইরেও বিভিন্নভাবে রাস্তাগুলো দখল করা ছিল। দোকানের সামনে ছোটখাটো দোকান আমাদের কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর জন্য আমাদেরকে বেগ পেতে হয়। আমরা আসার পরই আগুনের মাত্রা অনেক বেশি দেখেছি। একটা পর্যায়ে মার্কেটের প্রায় চার ভাগের তিনভাগ সম্পূর্ণ আগুন ধরে যায় এবং আমরা চেষ্টা করি এই মার্কেটের ভেতরে যেন আগুন আবদ্ধ থাকে। ফায়ার ফাইটাররা সর্বাত্মক চেষ্টা করে আগুন একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছেন।  

এখন আগুন নির্বাপণের চেষ্টা চলছে। আগুনটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তবে নির্বাপণে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময় মার্কেটের প্রতিনিধিদের ডেকে আলোচনা করেছি। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং ওনাদেরকেই করতে হবে। এই মার্কেটে প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং-এর কোনো ইক্যুইপমেন্টই ছিল না। কোনো ধরনের পানির সোর্স ছিল না। আমরা সব থেকে বেশি বেগ পেয়েছি পানির সোর্স না থাকার কারণে। এখানে বিভিন্ন ভবনে পানির সোর্স রয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়।

খুব দ্রুত আমাদের পানি শেষ হয়ে যায়। আমরা বিশেষ পানিবাহিত গাড়ি এনে এবং অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাই।

আগুন নেভানোর এত সময় লাগার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগুন নেভানোর আরেকটি বড় বাধা ছিল মানুষের ভিড়। মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের পুলিশ, বিজিবি তারা খুবই হিমশিম খেয়েছে। এই ভিড়ের কারণে আমাদের এত সময় লেগেছে।

তিনি বলেন, আগুনের সূত্রপাত আমরা তদন্ত করে জানার চেষ্টা করবো। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যারা ছিল তাদের দুই একজন কিছুটা আহত হয়েছেন। এর বাইরে কোনো বড় ধরনের হতাহতের তথ্য নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
পিএম/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।