ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দুই মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান, কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মুদ্রাসহ গ্রেপ্তার ৪

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
দুই মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান, কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মুদ্রাসহ গ্রেপ্তার ৪

ঢাকা: রাজধানীর চকবাজারে দুটি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মকবুল হোসেন (৫০), মো. মাসুদ আলম (২৭), এম.এম. জাকারিয়া (৫৬) ও মো. জামাল উদ্দিন (৫৪)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ২১ লাখ বাংলাদেশি টাকাসহ ৭৪ লাখ বাংলাদেশি টাকার মূল্যমানের বৈদেশিক মূদ্রা উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।

আজাদ রহমান জানান, রাজধানীর চকবাজারের সখ সেন্টারে অবস্থিত ‘চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও 'বকাউল মানি এক্সচেঞ্জ' অফিস কক্ষে অভিযান পরিচালনা করে সিআইডি। এ সময় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

অভিযানে চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের অফিসে ঢুকে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির জন্য শপিং ব্যাগ থেকে টাকা বের করার সময় মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার দেখানো দোকানের ভেতর এক নম্বর কাউন্টারের সামনে থেকে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০০ বাংলাদেশি টাকা, ৫৫ হাজার রিয়াল, ৩ হাজার ৭০ ইউরো এবং ১৫৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জব্দ করা হয়।  

জিজ্ঞাসাবাদে মকবুল জানান, এসব মুদ্রা চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের মালিক আহমেদ নোমানের কাছে বিক্রির জন্য এবং বাংলাদেশি টাকা দিয়ে একই দোকান থেকে ইউএস ডলার কেনার উদ্দেশে এসেছেন।

এরপর  চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের অফিসে অভিযান চালিয়ে এক নম্বর কাউন্টার থেকে ২০ হাজার ৭৫৫ ইউএস ডলার, ৪৮ হাজার ৯৩৭ সৌদী রিয়াল, ২১০০ ইউরো, ১১ হাজার ৭০০০ ভারতীয় রুপি, ২ হাজার ৯০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত এবং ৫ নম্বর কাউন্টার থেকে ১৩ লাখ বাংলাদেশি টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় মাসুদ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মাসুদ জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ৫ নম্বর কাউন্টারের মালিক শামীমা আক্তারের ম্যানেজার। একই দোকানের ৮ নম্বর কাউন্টারের ফাইল ক্যাবিনেট থেকে ২ হাজার ২০ সৌদি রিয়াল ও ৬ লাখ  বাংলাদেশি টাকা জব্দ করা হয়।  

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান আরও বলেন, চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের মালিক আহমেদ নোমান হলেও তিনি সব সময় দোকানে থাকেন না। তবে আহমেদ নোমানের হয়ে তার বড় ভাই এম.এম. জাকারিয়া দোকানটি পরিচালনা করেন। এম.এম. জাকারিয়া এ দোকানের মোট ৯টি কাউন্টারের মধ্যে ৯ নম্বর কাউন্টারের মালিক। পরবর্তীতে ৯ নম্বর কাউন্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি চেঞ্জার মনিটরিং সিস্টেমে চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের কাছে ইউএস ৮০৬ ডলার, ২০০ পাউন্ড, ৬২০ সৌদী রিয়াল এবং ৪০ ইউরো আছে বলে তথ্য থাকলেও প্রকৃত পক্ষ্যে তারা গোপনে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে রাখে।

এছাড়া চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবসা করার জন্য একটি কাউন্টার রাখার অনুমোদন রয়েছে কিন্তু তারা ৯টি কাউন্টার খুলে ব্যবসা করছে।  

সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তীতে একই ভবনের নিচতলার ১১০ নম্বর রুমের বকাউল মানি একচেঞ্জের ভেতরে অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার ৮৭৮ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ১ হাজার ৩৫ দুবাই দিরহাম, সাড়ে ৫ হাজার ভারতীয় রুপি জব্দ করা হয়। এ সময় মো. জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

আজাদ রহমান বলেন, গ্রেপ্তাররা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সহায়তায় মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কোনো প্রকার নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে দৈনিক বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা কেনা-বেচা করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী কোনো মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান দৈনিক ২৫ হাজার ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করার জন্য মজুত রাখতে পারে। তারা জেনেও যথাযথ নিয়ম ভঙ্গ করে বৈদেশিক মুদ্রা কেনা-বেচা করে ও বৈদেশিক মুদ্রা কেনার জন্য বাংলাদেশি টাকা হেফাজতে রাখে 

এ অপরাধে গ্রেপ্তার ৪ জনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে পল্টন মডেল থানায়  একটি মামলা রুজু করেছে সিআইডি।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
পিএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।