ফরিদপুর: ফরিদপুর রেলস্টেশন। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই টুপটাপ বৃষ্টি ঝরছে।
বৃদ্ধা হাজেরা বিবি দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানান, "স্বাধীনতার সময় ঘাট-বমি ও জ্বরে আমার স্বামী হামেদ মৃধাকে হারাই। খুব ভালোবাসতো আমায়। তারপর থেকে বড় একা হয়ে গেলাম আমি। ফরিদপুর শহরের শোভারামপুর স্লুইসগেটে একটু মাথা গোজার ঠাঁই ছিল। যেখানে আমার ছেলে মোহন বউ নিয়ে থাকে। প্রথম বউ মারা যাওয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছে সে। আমারে বউ ভাত দেয় নারে বাজান। খালি বলে ইনি যেন এই বাড়ি না আসে! বৃদ্ধ হয়েছি, পায়ে বল পাইনা। কি করবো বাপ। বয়সকালে স্বামী হারিয়ে ভাতের হোটেলে কাজ করে ছেলেটারে বড় করলাম। এখন ছেলে বউয়ের হয়ে গেছে! আমি পর। সবই নসিবরে বাপ!
হাজেরা বিবি আরও জানান, এখন গায়ে আর বল নাই; তাই কামকাজ করতে পারি না। তাইতো এই রেলস্টেশনে বসে হাত পাতি। কেউ দেয়, কেউবা মুখ ফিরিয়ে নেয়। রাত হলে এ রেলস্টেশনেই ঘুমাই। খুব মশায় কামড়ায়রে বাপ।
হাজেরা বিবি বলেন, আমারও ছোট ছোট দুইটা নাতিন আছে, সেই কবে থেকে দেখিনি তাদের। এসময় দু-চোখ থেকে বৃদ্ধার পানি ঝরছিল।
হাজেরা বিবি তার ছেলের সম্পর্কে জানান, আমার ছেলে কখনও রাজমিস্ত্রীর জোগাল দেয়, আর যখন কাজ না থাকে তখন ঘুরে বেড়ায়। আমারে কেউ দেখে না-রে বাজান। আমারে ভাত কাপড় না দিল, তবুও বেঁচে থাক ছেলেটা। ভালো থাকুক ওরা!।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
এসএম