ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাক্সকলে ঝাঁজরা উপকূল রক্ষা বাঁধ, নির্বিকার পাউবো!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
বাক্সকলে ঝাঁজরা উপকূল রক্ষা বাঁধ, নির্বিকার পাউবো!

সাতক্ষীরা: ঘেরে লবণ পানি তোলার লক্ষ্যে বেড়িবাঁধে স্থাপিত অবৈধ নাইন্টি পাইপ ও বাক্সকলগুলো অপসারণ না করায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার উপকূল রক্ষা বাঁধ।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পরানপুর ও কাঠামারির মাঝামাঝি একটি একটি বাক্সকল ভেঙে যায়।

এতে নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

জানা গেছে, নূর ইসলাম নামে এলাকার এক বাসিন্দার মাছের ঘেরের বাক্সকল ভেঙে ১৫ ফুট এলাকাজুড়ে বেড়িবাঁধের তলার মাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে যত্রতত্র ছিদ্র করে পাইপ ও বাক্সকল বসিয়ে বেড়িবাঁধ দুর্বল করে দিয়েছে ঘের মালিক ও লবণ পানি ব্যবসায়ীরা। তারা মূলত ঘের মালিকদের কাছে নদীর লবণ পানি বিক্রির জন্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে এসব বাক্স স্থাপন করেন। কৈখালী ইউনিয়নজুড়ে অন্তত ২০টি স্থানে বাক্সকল বসিয়ে পানি উত্তোলন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ঝাঁজরা হওয়া বেড়িবাঁধ।

স্থানীয় আব্দুর রহিম ও কালাম গাজী বলেন, বাক্সকলের কারণে কিছু কিছু এলাকায় সিঅ্যান্ডবির রাস্তাও দেবে গেছে। অন্যদিকে কিছু স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের দুপাশ ভাঙনের কবলে পড়েছে। সরকার বেড়িবাঁধ রক্ষার্থে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পাউবোর অবহেলায় তা পানিতে যাচ্ছে। অনিরাপদ হয়ে পড়ছে জনজীবন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাক্সকলের মাধ্যমে নদীর পানি ঘেরে বিক্রি করে সংশ্লিষ্টদের বার্ষিক আয় প্রায় ২ কোটি টাকা। এই টাকার ভাগ পেয়ে থাকেন পাউবোর নিচু তলা থেকে উপরতলার কর্মকর্তারা। এজন্য বেড়িবাঁধ রক্ষায় বাক্স কল অপসারণে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও পাউবো এক প্রকার নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে।

কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, শনিবার কৈখালী ইউনিয়নের পরানপুর ও কাঠামারির মাঝখানে বাক্সকল ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে যায় এবং লোকজন দিয়ে আপাতত সংস্কার করেছি। তবে এরকম আরও কয়েকটি বাক্সকল আছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে এসব বাক্সকল ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। বাক্স কলগুলো অপসারণ করতে হবে। যত্রতত্র বেড়িবাঁধ ছিদ্র করতে দেওয়া যাবে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিও জাকির হোসেন বলেন, আমরা দ্রুত ভাঙনকবলিত এলাকা সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছি। তবে, অবৈধ বাক্সকলগুলো অপসারণের বিষয়ে পাউবোর দায় এড়িয়ে যান তিনি। বলেন, বাক্স অপসারণ উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের উপর নির্ভর করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।