ঢাকা: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বিলুপ্তি ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি।
দাবি আদায়ে এরই মধ্যে বিএনপি সহ-সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
কয়েকটি ধাপের আন্দোলন শেষে এবার চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এ লক্ষে চলতি অক্টোবর মাসের বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলটি। তার মধ্যে রয়েছে, ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে সরকারকে আল্টিমেটাম, ঢাকামুখী রোডমার্চ, গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় ঘেরাও, অবরোধ এবং প্রয়োজনে হরতাল দেওয়ার পরিকল্পনা।
গত সোমবার (০২ অক্টোবর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
সরকার বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বর্তমানে সারাদেশে রোডমার্চ কর্মসূচি চলছে। চলমান ১৫ দিনের এই কর্মসূচি আগামীকাল বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) চট্টগ্রামের সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে। চট্টগ্রামের সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে দলটির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে দুর্গাপূজার উৎসব চলাকালে আন্দোলনের কর্মসূচি না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপূজার উৎসবের পর কঠোর কর্মসূচির কথা ভাবছে দলটি।
বিএনপির নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর রাজনৈতিক পদক্ষেপ, নির্বাচনের তফসিল, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিবেচনা করে যেকোনো সময় কর্মসূচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
বিএনপির সূত্র জানায়, আগামী ২০ অক্টোবর পর্যন্ত গতানুগতিক কিছু কর্মসূচি থাকবে। এ সময়ে ঢাকায় মহাসমাবেশ ছাড়াও কয়েকটি সমাবেশ, পদযাত্রা ও রোডমার্চে দলীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখা হবে। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতেও কয়েকটি কর্মসূচি থাকবে। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজার জন্য পাঁচদিন দলীয় কোনো কর্মসূচি থাকবে না। দুর্গাপূজার পর চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ‘কঠোর কর্মসূচি’ শুরু হতে পারে।
বিএনপি সূত্র জানায়, চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলনে এ মাসের শেষ সপ্তাহে রাজধানীমুখী রোডমার্চ করার কথা আলোচনা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিদিন ঢাকার আশপাশের একটি জেলা থেকে রোডমার্চ নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসবে। সেখানে জনসভা হবে। এরপর সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন, সংসদ ভবন, বিচারাঙ্গন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করা হতে পারে। তারপর প্রয়োজনে সড়ক ও নৌপথ অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যেতে পারে দলটি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি জনগণের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এ আন্দোলন। চলতি মাসেই সরকার পতনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে দুর্যোগ উৎসবের সময় কঠোর কর্মসূচির থাকবে না। মূলত মাসের শেষ সপ্তাহে কঠোর কর্মসূচি থাকবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুজ্জামান শিমুল বিশ্বাস বলেন, আমাদের চলমান আন্দোলনে সারাদেশের মানুষ সাড়া দিয়েছে। চলমান এ আন্দোলন বর্তমানের শেষ ধাপে রয়েছে। এ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২৩
টিএ/এফআর