কক্সবাজার: কক্সবাজারে উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব জানায়, সম্প্রতি এ চক্রটির সদস্যরা বাংলাদেশি পাঁচ নাগরিককে মিয়ানমারে জিম্মি রেখে মুক্তিপণ দাবি করেছেন।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।
গ্রেপ্তারকৃত তিনজন হলেন, উখিয়ার শফিউল্লাহকাটা ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৩ ব্লকের বাসিন্দা মৃত দিল মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ ছাবের (২৬) ও একই এলাকার কেফায়েত উল্লাহর মেয়ে আরাফা বেগম (৩৭) এবং উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের গয়ালমারা এলাকার মোহাম্মদ আলীমের ছেলে মোহাম্মদ শামীম (২৫)।
গ্রেপ্তার হওয়া মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের হাতে পেকুয়া উপজেলার হোসাইনাবাদ এলাকার মো. হেলাল উদ্দিনসহ পাঁচজন পাচারের শিকার হয়েছেন বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আবু সালাম চৌধুরী বলেন, পাচারের শিকার পেকুয়া উপজেলার হোসাইনাবাদ এলাকার মো. হেলাল উদ্দিন পেশায় একজন কৃষক। তিনি পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানের বরজে কাজ করতেন। এই সুবাদে তার সঙ্গে মানব পাচারকারী চক্রের কতিপয় সদস্যদের পরিচয় হয়। চক্রটির সদস্যরা উন্নত জীবন ও উচ্চ বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে হেলালসহ পেকুয়ার আরও কয়েক যুবককে মালয়েশিয়ায় পৌঁছে চুক্তির টাকা পরিশোধেরও প্রস্তাবনা দেয়। একপর্যায়ে ৮ অক্টোবর ভোরে হেলালসহ যুবক সাগরপথে মালয়েশিয়া যাত্রার উদ্দ্যেশে বাড়ি থেকে রওনা হয়। পরে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে এসব যুবককে ট্রলারে করে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়।
গ্রেপ্তার যুবকদের স্বীকারোক্তির বরাতে র্যাবের এ জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক বলেন, ট্রলারে করে সাগরের দীর্ঘ দুর্গম পথে পাচারের শিকার যুবকরা কাতর হয়ে পড়েন। পরে তারা দেশে ফিরতে মিনতি শুরু করলে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাদের মিয়ানমারের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জিম্মি করে রাখেন। এরপর মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ভুক্তভোগী স্বজনদের কাছে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে মারধরের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে ভুক্তভোগীদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় বলেন আবু সালাম চৌধুরী।
তিনি জানান, রোববার (২২ অক্টোবর) মধ্যরাতে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছেন, এমন খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। সেখানে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ৬/৭ জন লোক পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান আবু সালাম চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
এসবি/এএটি