ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সালথায় মাদরাসাছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব, অবরুদ্ধ সুপার!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
সালথায় মাদরাসাছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব, অবরুদ্ধ সুপার!

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথায় নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক মাদরাসাছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সুপারকে মাদরাসার ভেতরে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় জনতা ও অভিভাবকরা।

 

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই সুপারকে উদ্ধার করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সোমবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।  

অভিযুক্ত সুপারের নাম ইব্রাহিম হোসাইন। তিনি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাসুরিয়া গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী অভিযোগ করে জানায়, হুজুর অনেকদিন ধরে নানা সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। সকালে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে আমাকে একটি অভিযোগের কথা বলে আমাকে ভয় দেখিয়ে আবারও আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। পরে আমি ভয়ে দ্রুত ক্লাস রুমে চলে যাই।

মাদরাসার শ্রেণি শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ওই ছাত্রী ক্লাস রুমে কাঁদছিল। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বিস্তারিত ঘটনাটি আমাকে জানায়। পরে আমি বিষয়টি মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্যকে অবগত করি।

মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদ কমিটির সদস্য মো. কাইয়ুম মোল্যা বলেন, সকাল ১০টার দিকে মাদরাসার শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ফোন করে বিষয়টি আমাকে জানায়। পরে আমি ঘটনাস্থলে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মুখ থেকে সব কথা শুনি। এ সময় মাদরাসার চারপাশে উত্তেজিত জনতা ও অভিভাবকরা সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ খবর দেই।

তিনি আরও বলেন, সুপারের বয়স ৪৫ বছর পার হলেও সে এখনো বিয়ে করেনি। মাদরাসার শ্রেণিকক্ষ দখল করে রাতে থাকেন। তার বাসা-বাড়ি সব কাজ মাদরাসার ভেতরেই করেন। এর আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে সুপারের বিরুদ্ধে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হালিম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। ওই ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের ছবি পোস্ট করায় তাকে ডেকে নিয়ে রাগারাগি করেন সুমন। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আপত্তিকর প্রস্তাবের অভিযোগ তোলে।

অভিযুক্ত মাদরাসার সুপার ইব্রাহিম হোসাইন বলেন, এক প্রবাসী যুবকের সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি ওই প্রবাসীর স্ত্রী আমাকে একাধিকবার জানিয়েছেন। তাই আজকে ওই ছাত্রীকে ডেকে রাগারাগি করেছি। কিন্তু আমাদের খণ্ডকালীন শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি বড় করে এমন পরিবেশ তৈরি করেছে।

সালথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিনয় কুমার চাকী বলেন, খবর পেয়ে মাদরাসায় গিয়েছিলাম। এসময় এক ছাত্রী একটি অভিযোগ করেছে। সেটা তদন্ত করে দেখা হবে।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালি বলেন, খবর পেয়ে শিক্ষা অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তিনি বিস্তারিত জেনে এসেছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।