ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবি পোশাকশ্রমিকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৩
নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবি পোশাকশ্রমিকদের

ঢাকা: গার্মেন্ট শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত মজুরি পুনর্নির্ধারণের দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান কালে বক্তারা এসব কথা বলেন।

 

বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন বলেন, গত ৭ নভেম্বর নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী যে মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে তা বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১৪১ এর সাথে সংগতিপূর্ণ নয় । ধারা ১৪১ মোতাবেক শ্রমিকের জীবন-যাপন ব্যয়, জীবন-যাপনের মান, উৎপাদন খরচ, উৎপাদনশীলতা, উৎপাদিত পণ্যের মূল্য, মুদ্রাস্ফীতি, কাজের ধরন, ঝুঁকি ও মান, ব্যবসায়িক সামর্থ্য, দেশের এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে দেখার বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে বার হাজার পাঁচশত টাকা মজুরি দিয়ে কোনোক্রমেই শ্রমিকরা জীবন-যাপন ব্যয় মেটাতে পারবে না। এই মজুরিতে উৎপাদনশীলতা রক্ষা করা যাবে না বিধায় জাতীয় স্বার্থ খর্ব হবে বলে আমরা মনে করছি।

শ্রমিক নেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, শ্রমিকদের এই নিম্নতম মজুরি সরকার শুধু মাত্র মালিকদের কথায় নির্ধারণ করেছেন।  তাই আমরা শ্রমিকরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আপনারা যদি আমাদের এই সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি দিতে চান তাহলে অবশ্যই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে। পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া কমাতে হবে। বাড়ি ভাড়া ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতি মালা থাকলেও তা মানা হয় না। সেগুলো ঠিক না করে সরকার আমাদের দাবি ২৩ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণ না করে সারে ১২  হাজার টাকা করেছে। যা কোনভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়।  

বিক্ষোভ সমাবেশে শ্রমিক নেত্রী জাহানারা বলেন, যেখানে কোন শ্রমিক আইডি কার্ড ছাড়া কারখানায় প্রবেশ করতে পারেনা। সেখানে আমাদের গার্মেন্টসের শ্রমিকদের উপর হামলা করতে রাজনৈতিক দলের লোকেরা মালিক পক্ষের সঙ্গে এক হয়ে অন্যায় ভাবে আমাদের উপর অত্যাচার করতে কারখানায় প্রবেশ করছে। এই অত্যাচার চালিয়ে আমাদের দমন করা যাবেনা। কারণ আমাদের দাবি কোন অন্যায় দাবি না। সরকার যদি আমাদের দাবি মেনে নেয় তাহলে আমরা শ্রমিকরা আন্দোলন করব না। তাই আমাদের সঙ্গে দয়া করে এই অপরাজনীতি করতে আসবেন না।  

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে গাজীপুরে নারী শ্রমিক নিহতের ঘটনায় এবং শ্রমিকদের আন্দোলনে পুলিশের বাধা দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। পাশাপাশি শ্রম ভবনে মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়।

মজুরি পুনর্নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবি গুলো হচ্ছে:

১। নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করে আরও বৃদ্ধি করতে হবে। ৬৫% মূল মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।

২। সকল গ্রেডে একই হারে মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে।

৩। প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধির বিধান নিশ্চিত করতে হবে।

৪। ৬ষ্ঠ এবং ৭ম গ্রেড বাতিল করে ৫টি গ্রেড করতে হবে।

৫। শিক্ষানবিশ এর বিধান বাতিল করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন। সঞ্চালনা করেন সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এম এ শাহীন, জয়নাল আবেদীন, শ্রমিক নেত্রী জাহানারা, কেন্দ্রীয় নেতা জালাল হায়দার প্রমূখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৩
ইএসএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।