ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন হুমকিতে ৫০০ পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন হুমকিতে ৫০০ পরিবার

চাঁদপুর: চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নে আবারও শুরু হয়েছে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন। ওই গ্রামের ইউসুফ খান বাড়ির পূর্ব পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনটি এবারে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

গত কয়েক দিনে ডাকাতিযার করাল গ্রাসে তলিয়ে গেছে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা। বর্তমানে ভাঙনের হুমকিতে আছে প্রায় ৫০০ পরিবার। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক।

স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে এলাকাটি। ডাকাতিয়া নদী প্রতি বছর অল্প অল্প করে ভাঙে। গত এক দশকে শুধু মৈশাদীতেই ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকার অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি। এত ক্ষতির পরও বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যায়। অচিরেই নদী ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভিটেমাটি হারিয়ে রাস্তায় ছিন্নমূল হতে হবে ওই এলাকার নদীর পাশে বসবাসকারী প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারকে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাশার জানান, প্রতি বছর নদী আমাদের জমি একটু একটু করে ভেঙে নিয়ে যায়। আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ সবাইকে বিষয়টি অবহিত করেছি। সবাই শুধু আশ্বাস দিয়ে যান। কিন্তু কাজ হয় না। অল্প অল্প করে ভাঙে তাই কেউ আমাদের দিকে নজর দেয় না। গত ১০ বছরে আমাদের এলাকার প্রায় এক কিলোমিটারের মত জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। ছিন্নমূল হয়ে গেছে প্রায় শতাধিক পরিবার। এখন আমাদের ভিটেবাড়ি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িটা নদীতে তলিয়ে গেলে থাকবো কোথায় জানি না। আমার কাছে এত টাকাও নেই যে, আবার অন্য কোথাও জমি কিনে ঘর তুলব। বাড়িটা ভেঙে গেলে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে।

ভাঙন এলাকায় বসবাসকারী আসমা বেগম জানান, এখন নদীটি যেখানে ভাঙছে সেখানে আমাদের বসত ঘর, রান্নাঘর ছিল। প্রতি বছর এখানে নদী ভাঙে। তাই গত বছর ঘরগুলো সরিয়ে নিয়েছি। এরপর আর জায়গা নেই। আবারও নদী ভাঙলে কি করব জানি না।

নদী থেকে প্রায় একশত মিটার দূরত্বে আছে মৈশাদী রেল স্টেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজারসহ অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি। নদী ভাঙন রোধ না হলে হুমকির মুখে পড়বে এসব প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাই ক্ষতিগ্রস্তরা নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। সঙ্গে নদী ভাঙন রোধে প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।

মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনের বিষয়টি বহুবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার ও সচিত্র প্রতিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু মৈশাদীবাসীর দু:খ লাগব হয়নি একটুও।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত জানান, ভাঙনের বিষয়টি জেনে আমি আমার দপ্তর থেকে লোক পাঠিয়েছি। আমি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, মৈশাদীসহ ডাকাতিয়া নদীর বেশ কয়েকটি এলাকা ভাঙন রোধে একটি ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। এটি পাস হলেই ভাঙন রক্ষায় কাজ শুরু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।