ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ বরগুনায় প্রস্তুত ৬৪২ আশ্রয়কেন্দ্র

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ বরগুনায় প্রস্তুত ৬৪২ আশ্রয়কেন্দ্র

বরগুনা: বরগুনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে বিরাজ করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ আতঙ্ক। আগে থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি জেলার ৬টি উপজেলায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩টি মুজিবকিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মোট দুই লাখ ৬৯ হাজার ৫১০ জন আশ্রয় নিতে পারবেন। সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ৯৬৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবী সদস্য প্রস্তুত রয়েছেন। ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য বর্তমানে জেলায় ৪৩০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা মজুদ আছে। এছাড়া ৯৬ বান্ডিল সিমেন্ট শীট ও ২০০০ কম্বল মজুদ রয়েছে। আগে ঘূর্ণিঝড় 'হামুন' মোকাবিলায় সম্প্রতি উপজেলাগুলোতে ৫০ মেট্রিক টন চাল এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।  

স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষে ৪২টি মেডিকেল টিম ও ০৭টি মোবাইল টিম প্রস্তুতসহ পর্যাপ্ত ওষুধ ও খাবার স্যালাইন মজুদ রাখা আছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০০০ লিটার পানি বিশুদ্ধ করার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট,  ৮ লাখ ৫৪ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ৭ হাজার জেরিকেন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়িবাঁধ ও স্লুইসগেট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৮ হাজার ৫০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা আছে।

এরআগে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতিমূলক জরুরি সভায় সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনার উপকূল জুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। আকাশ মেঘলা থাকায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একবারও রোদের দেখা মেলেনি।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঠান্ডা আবহাওয়া আর বৃষ্টি সবমিলিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বরগুনায় কোনো আবহাওয়া অফিস না থাকায় স্থানীয়রা সঠিক সময় সঠিক সংকেত পাচ্ছেন না।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বরগুনা উপজেলা টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে নিরাপদে থেকে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আমরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। এরই মধ্যে মাইকিং ও অন্যান্য প্রচার প্রচারণার কাজ শুরু করেছি। সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ৯৬৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবী সদস্য প্রস্তুত রয়েছে।

সভায় জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্যোগ বেড়ে গেলে যাতে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা যায় সেজন্য প্রস্তুতি রাখতে সবাইকে প্রস্তুত থাকার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।

২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে বরগুনার পাথরঘাটা এবং তালতলী উপজেলার সব ইউনিয়ন, বেতাগী উপজেলার এক তৃতীয় অংশ ও সদর উপজেলার বদরখালী, ৭ নম্বর ঢলুয়া, আয়লা পতাকাটা ও ফুলঝুড়ি ইউনিয়নে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলায় বরগুনা জেলায় বেড়িবাঁধের বাইরে ও চরাঞ্চলের এলাকাগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরে জেলার প্রায় দুই শতাধিক মানুষ মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।