ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় শিক্ষার্থীর শরীরে পেট্রল নিক্ষেপ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় শিক্ষার্থীর শরীরে পেট্রল নিক্ষেপ

মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার রাজৈরে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ৯ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে পেট্রল দিয়ে হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে একদল বখাটে।  

রোববার সকালে (১৯ নভেম্বর) রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।  

অভিযুক্ত জয় ও দিগন্ত আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বড়খোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের বাড়ি বড়খোলা গ্রামে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে দুইজনই।

এ ঘটনার পর অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে মাদারীপুরের রাজৈরের আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বড়খোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে আলাদাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল একই শ্রেণির দিগন্ত রায় ও জয় বিশ্বাস। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দিগন্ত ও জয়।

রোববার সকালে ভাইয়ের সঙ্গে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসছিল ওই শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের কাছে এলে ইজিবাইকে আসা দিগন্ত ও জয়ের সহযোগীরা শিক্ষার্থীকে মারধর করে। একপর্যায়ে সঙ্গে থাকা বোতল থেকে তার শরীরে পেট্রল ঢেলে দেয়। এ সময় এলাকা ত্যাগের হুমকিও দেওয়া হয়। পরে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বখাটেরা।

ভাই ও বোনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেও কাটেনি আতঙ্ক।  

ওই শিক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত দিগন্ত ও জয়। প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়নের কোথায়ও উত্ত্যক্তকারীদের জায়গা নেই। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনার বিচার চাই। আমরা একযোগে কাজ করছি, অপরাধীদের আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য।

আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বদখোলা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক স্বপন ঠাকুর বলেন, বিষয়টিকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। অল্পের জন্য মেয়েটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচেছে। আমরা সবাই এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

রাজৈরের কদমবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মো. লোকমান মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। পরে সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতো একই শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী। মূলত প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এ ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, এরই মধ্যে থানা পুলিশ ও কদমবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বলা হয়েছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।