ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘যা পারেন লেইখে দিয়েন, এক্ষুণি বের হন’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
‘যা পারেন লেইখে দিয়েন, এক্ষুণি বের হন’ সাংবাদিকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের সময় রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মিয়া

ফরিদপুর: জমিজমা নিয়ে বিবাদে দুই ভাইয়ের মারামারির বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মিয়া।

হারুন আনসারী নামের ওই সাংবাদিককে চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘আস্তে কথা কন মানে? আমি জাকির কথা বলিই এইভাবে।

আপনাগের মতো তিনদিনের সাংবাদিকরে আমি ..... (প্রকাশে অযোগ্য) দাম দেইনা। ’

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে রায়পুর ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে এভাবে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন চেয়ারম্যান জাকির হোসেন।  

রায়পুর ইউনিয়নের বোর্ড অফিসের পাশেই জমিজমা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে বৃহস্পতিবার সকালে দুই ভাইয়ের মারামারির ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে চেয়ারম্যানের বক্তব্য জানতে চাইলে জাকির হোসেন বলেন, আপনাগে মতো সাংবাদিকগে ...... (প্রকাশে অযোগ্য) দাম দেইনে আমি। এসবই খুঁচোয় বেড়ান আপনারা।  

জানা যায়, রায়পুর বোর্ড অফিসের পাশেই মৃত আব্দুল হাই কাজীর তিন সন্তানের মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ। এদের মধ্যে বড় ছেলে কাশেম কাজী ও ছোট ভাই কাজী ইউনুসের চলাচলের পথে দুইপাশে বড় বড় গর্ত কেটে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন।  

বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি হয়। এতে বড় ভাই কাশেম কাজী বাঁশ দিয়ে আঘাত করলে ছোটজন ইউনুসের মাথা ফেটে যায় বলে তারা অভিযোগ করেন। অপরপক্ষে কাশেম কাজীও তাকে মারপিট করে বলে অভিযোগ করেন।  

আহত দুই সহোদরের ৮০ বছর বয়সী মা আমেনা বেগম বলেন, বড় ছেলে কাশেম ছোট ছেলে ইউনুসের বাড়িতে চলাচলের পথে বাধা দিচ্ছিল। তাই আমি আমার ভাগের ৬ শতাংশ জমি ছোট ছেলের নামে দলিল করে লিখে দেই। এরপর থেকে বড় ছেলে ও মেঝ ছেলে মিলে ছোটজনের বিরুদ্ধে লেগেছে। তারা রাস্তার ওপর বড় বড় গর্ত করে, ইট ও গোবর রেখে চলাচলে বাধা দিচ্ছে। এনিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার অনেকবার সালিশ করে দিছেন। কিন্তু বড়জন মানে নাই।

এ তথ্য জানতে পেরে রাস্তার পাশেই অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে যান সাংবাদিকেরা। সেখানে অফিস কক্ষে তিন-চারজনকে নিয়ে ধূমপান করতে দেখা যায় ইউপি চেয়ারম্যানকে।

 এসময় সাংবাদিকেরা তাদের পরিচয় দিয়ে দুই ভাইয়ের বিবাদের বিষয়টি জানতে চাইলেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মিয়া। রাগান্বিত কণ্ঠে বলেন, আমি এ বিষয়ে আপনাদের কিছুই বলবো না৷

এসময় উপস্থিত দুটি জাতীয় গণমাধ্যমের ফরিদপুর প্রতিনিধি তাকে বলেন, আপনি উত্তেজিত হবেন না। আমরা কারো পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কিছু জানতে চাইছি না। এ বিষয়ে আপনি কিছু বলতে পারবেন না, এ কথাটুকুই ক্যামেরার সামনে বলেন। এ কথা শুনে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন তিনি উল্টো আরো উত্তেজিত হয়ে অশ্রাব্য উক্তি করতে থাকেন।  

এক পর্যায়ে বলেন, আপনি যাবেন নাকি? যান বাইরে যান এখনই।

সাংবাদিকের সঙ্গে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলার বিষয়টি স্বীকার করে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান  জাকির হোসেন মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এক সাংবাদিকের সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে মধুখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি আমাকে এ বিষয় নিয়ে রাগারাগিও করেছেন। আমার ভুল হয়ে গেছে, আমি ওই সাংবাদিকসহ সকল সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।