সিলেট: বিশ্বনাথ উপজেলায় কিশোর আমিন মিয়া ওরফে সিয়ামকে (১৬) হত্যার রহস্য ভেদ করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরকুম আলী (৪০) নামে এক যুবককে।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের হয়দরপুর হাওরের মাঝে পাঁচলার খালের পূর্ব পাড়ের ঝোপ থেকে সিয়ামের মরদেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার হয়, পরে সিয়ামের ভাই ইয়ামিন পরিচয় নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৮(১২)’২৩) দায়ের করেন। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আরকুম আলীকে তার রিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরকুম আলী উপজেলার উত্তর আজিজ নগর কান্দি উত্তর গ্রামের বাসিন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার অপরাধ স্বীকার করেছেন।
আরকুম আলী পুলিশকে জানান, এফসি ব্রিকসে মাটি আনলোডের কাজ করার সময় সিয়ামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। গত বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সিয়ামের বাবা ভাই নিজ এলাকায় যান। এ সময় তিনি কিশোর সিয়ামকে বলাৎকারের পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সিয়ামকে গোপন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন আরকুম আলী। রাত ৮টার দিকে ব্রিকসের নিকটবর্তী পূর্বপাশের কবরস্থানের রাস্তার পাশ দিয়ে হয়দরপুর হাওরে যান তারা। হাওর পার হয়ে পশ্চিম পাশে যাওয়ার কথা বলে সিয়ামকে তার পরিধেয় বস্ত্র খুলে ফেলতে বলেন আরকুম। এরপর তিনি সিয়ামকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন। সিয়াম রাজি না হলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
বলাৎকারের ঘটনায় সিয়াম কান্না শুরু করে। এক পর্যায়ে সে পুরো ঘটনা তার বাবা, ভাই ও ব্রিকস ফিল্ডের ম্যানেজারের কাছে বলে দেবে বলে জানায়। ভয় পেয়ে আরকুম সিয়ামের মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
সিলেট জেলার সহকারী পুলিশ সুপার সম্রাট তালুকদার বলেন, হত্যার পর সিয়ামের মরদেহ ঝোপের মধ্যে ফেলে রাখেন আরকুম। তার প্যান্ট, জুতা নদীতে ফেলে দেন। এরপর হাওর পার হয়ে পশ্চিম পাশে এসে সিয়ামের গায়ে থাকা তাওয়াল ডোবায় ফেলে দেন। ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটার পশ্চিমে কচুরিপানার ভেতরে তার শার্ট লুকিয়ে ফেলেন। রোববার সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজনের মাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে আলামতগুলো উদ্ধার করা হয়।
আরকুমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান সম্রাট তালুকদার।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩
এনইউ/এমজে