ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জীবিত নবজাতক বদলে প্রসূতির কোলে মৃত বাচ্চা, মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
জীবিত নবজাতক বদলে প্রসূতির কোলে মৃত বাচ্চা, মামলা

কুমিল্লা: কুমিল্লার চান্দিনায় এক প্রসূতি মায়ের জীবিত নবজাতক বদলে অন্যের মৃত বাচ্চা দেওয়ার অভিযোগে উপজেলা সদরের মা ও শিশু হাসপাতালের মালিকসহ নার্সদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন নবজাতকের মামা।  

এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে মৃত শিশুর মরদেহ দুই মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

 

রোববার (১৪ জানুয়ারি) উপজেলা সদরের মোকাববাড়ি কবরস্থান থেকে শিশুর মরদেহ উত্তোলন করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর বিকেলে আবারও একই কবরে সমাহিত করা হয়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৫ নভেম্বর চান্দিনা উপজেলার কেরণখাল ইউনিয়নের থানগাঁও গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী পারভীন আক্তারের প্রসব ব্যথা অনুভব হলে রাত ১টায় চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে রাত ৩টায় অস্ত্রোপচারে ওই প্রসূতির পুত্র সন্তানের মা হন। পরিবারের লোকজন নবজাতককে দেখতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই নবজাতক মৃত বলে জানায়। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি প্রসূতির পরিবার।  

ওই ঘটনায় প্রসূতির ভাই মো. কাউসার বাদী হয়ে গত ২০ নভেম্বর কুমিল্লা আদালতের মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ওই হাসপাতালের মালিক ও পরিচালক মাহাবুব মিয়াসহ পাঁচজন নার্সকে আসামি করা হয়।  

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার রাতে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর গভীর রাতে সিজার করা সম্ভব হবে না বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ; কিন্তু রাত ৩টার দিকে রোগীর পরিবারের কারও কোনো অনুমতি ছাড়াই এবং কোনো বিশেষজ্ঞ গাইনি ডাক্তারের উপস্থিতি ছাড়াই সিজার করায় প্রসূতি পারভীন আক্তারকে। অপারেশনের পর জীবিত পুত্র সন্তানক দেখিয়ে হাসপাতালের ভেতরের কক্ষে নিয়ে যায় ওই নবজাতক শিশুকে। বেশ কিছুক্ষণ পর রোগীর স্বজনরা নবজাতককে দেখতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় প্রসূতি মৃত সন্তান জন্ম দিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই প্রসূতির নবজাতক পুত্রসন্তান অন্যত্র পাচার করে অন্যকোনো প্রসূতির মৃত বাচ্চা প্রদান করেন।  

এ ঘটনায় আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কুমিল্লা পিবিআইয়ে পাঠান। পুলিশ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ডিএনএ টেস্ট জরুরি মনে করে মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের জন্য আদালতের অনুমতি চান। গত ১৬ ডিসেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ মরদেহ উত্তোলন করার অনুমতি দেন আদালত।  

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই কুমিল্লার উপ-পরিদর্শক মো. ইব্রাহীম জানান, রোববার চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা মজুমদারের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে আবারও একই স্থানে দাফন করি। মামলাটি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি।

চান্দিনা মা ও শিশু হাসপাতালের মালিক মাহাবুব মিয়া বলেন, আমরা কারো বাচ্চা পরিবর্তন করিনি। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। আমরা পিবিআইয়ের মাধ্যমে আবেদন করেছি ডিএনএ টেস্ট করার জন্য। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।