ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাটোরে তীব্র ঠাণ্ডায় শত অসহায় মানুষের পাশে ‘শীতের হাসি’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
নাটোরে তীব্র ঠাণ্ডায় শত অসহায় মানুষের পাশে ‘শীতের হাসি’

নাটোর: মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেঁকে বসেছে শীত। আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবনে নাটোরে শত শীতার্ত অসহায় দরিদ্র মানুষকে লেপ বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শীতের হাসি’।

গত চার বছর ধরে অসহায় মানুষকে শীতবস্ত্র বিতরণ করে আসছে সংগঠনটি।

রোববার (২১ জানুয়ারি) রাতে জেলা সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে লেপ বিতরণ কার্যক্রমে অংশীদার হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  সারমিনা সাত্তার সুবিধাভোগীদের হাতে লেপ হস্তান্তর করেন।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন এবং ‘শীতের হাসি’র সভাপতি ও গণমাধ্যমকর্মী মো. মামুনুর রশীদসহ সদস্যরা।

গত শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাতে নলডাঙ্গায় উপজেলার কুটরিপাড়া, মাধবপুর ও নলডাঙ্গা গ্রামের প্রায় শতবর্ষী অসহায় চারজন বৃদ্ধার হাতে লেপ বিতরণ করার মধ্য দিয়ে এবারের শীত মৌসুমে সংগঠনের বিতরণ কার্যক্রমের সূচনা করা হয়। নলডাঙ্গা ইউএনও দেওয়ান আকরামুল হক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সুবিধাভোগীদের হাতে লেপ হস্তান্তর করেন।

এ বিষয়ে সদর ইউএনও সারমিনা সাত্তার বলেন, মানবিক রাষ্ট্র গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই সমাজের অসহায় মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটবে। আর এর মাধ্যমে অর্জিত হবে আমাদের কাঙ্ক্ষিত মানসিক প্রশান্তি। শীতের হাসি যে কাজটি করছে এটি দেশের মধ্যে বিরল। কেননা দেশের সবখানেই সাধারণত শীতার্ত মানুষ কম্বল দিয়ে থাকেন। আর সেখানে নাটোরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শীতের হাসি’ মানুষকে দিচ্ছে কাভারসহ লেপ। এমন মানবিক সহায়তা দেওয়ায় দেশের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

এ বিষয়ে নলডাঙ্গা ইউএনও দেওয়ান আকরামুল হক বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শীতের হাসি’ যে কাজটি করছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এভাবে সবাই এগিয়ে এলে দেশের ছিন্নমূল, দরিদ্র-অসহায় মানুষকে আর শীতে কষ্ট করতে হবে না। আমরা যে যার মতো করে একটু করে সহানুভূতি ও মানবিক সহায়তা-সেবা পৌঁছে দেব -এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন বলেন, তীব্র শীতে লেপের উষ্ণতা ছড়াচ্ছে ‘শীতের হাসি’। ফলে উপকৃত হচ্ছেন অসহায় মানুষ, জয় হচ্ছে মানবতার, প্রশান্তি হচ্ছে আমাদের। আমার প্রত্যাশা, সামনের দিনগুলোতে শীতের হাসির পথচলা আরও বেগবান হোক, অন্যদের উৎসাহের উৎস হোক।

‘শীতের হাসি’ সংগঠনের সভাপতি মো. মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে জানান, দেশের দরিদ্র মানুষের অনেকের ঘরে শীত নিবারণের জন্য লেপ নেই। কনকনে শীতে এখনও মানুষ শুধুমাত্র কাঁথা বা কম্বল নিয়ে অনেক কষ্টে রাত কাটান। তাদের কথা বিবেচনা করে গত চার বছরে শীত নিবারণে ৪০৭ জন অসহায় মানুষকে লেপ দেওয়া হয়েছে। এবার পঞ্চম বছরে ১০০ জনকে লেপ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে কয়েকজন সদস্য ও দানশীল ব্যক্তিদের নিয়ে এ সংগঠনের যাত্রা শুরু করা হয়। শীতার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এবং কনকনে শীতে একটু শান্তির নিদ্রা ও উষ্ণতা দিতে ব্যবস্থা নেওয়াই হচ্ছে সংগঠনের আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এজন্য কিছু নিবেদিত ও দানশীল মানুষ গত কয়েক বছর ধরে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আমরা নিজেরা নিজেদের অর্থায়নে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতি বছর শীত এলেই শত মানুষকে রাতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব লেপ পৌঁছে দিচ্ছি।

মো. মামুনুর রশীদ আরও বলেন, এ কার্যক্রমে দেশের কোনো বিত্তবান মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে আমরা তা গ্রহণ করব এবং আরও বেশি বেশি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।

বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।