ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ধর্ষণের শিকার নারীকে হাসপাতাল থেকে অপহরণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪
ধর্ষণের শিকার নারীকে হাসপাতাল থেকে অপহরণ

খুলনা: বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক দিন ধরে ধর্ষণের শিকার এক নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেলের (ওসিসি) সামনে থেকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে ওই নারীর স্বজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ফিল্মি স্টাইলে তাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক।

এ সময় অপহরণকারীরা যমুনা টিভি ও এসএ টিভির ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।  তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে দুই সাংবাদিক আহত হন।

মাইক্রোবাস চলে যাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদ আহমেদকে আটকে রাখে স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

আটক গাজী তৌহিদ আহমেদ ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই।

এর আগে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী।  বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার। শনিবার রাত সোয়া ১১টায়  ওই নারী নিজেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন।

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় ওসিসি থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাংলাদেশ মানবাধিকবার বাস্তবায়ন সংস্থার সমন্বয়কারী আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ওই নারীকে আইনি সহায়তা দিতে তাদের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রোববার বিকেলে হাসপাতালের ওসিসি যান। সেখানে অপরিচিত এক ব্যক্তি ওই নারীর ছাড়পত্র নিচ্ছিলেন। তার পরিচয় জানতে চাইলে ওসিসির দায়িত্বরত ব্যক্তিরা সবাইকে বাইরে বের করে দেন। বাইরে বের হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ১৫-২০ জন ব্যক্তি জোর করে তাকে একটি বড় মাইক্রোবাসে (হায়েস) তুলে নিয়ে যান। তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় দুই সাংবাদিক আহত হন।

তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল ওসিসি। সেখান থেকে ভিকটিমকে যেভাবে অপহরণ করা হলো তাকে আমরা আতঙ্কিত। পুরোটা সময় ওসিসির নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যরা নীরব ছিলেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (সোনাডাঙ্গা) আবু নাসের মো. আল আমিন বলেন, ওই নারী তার মায়ের সঙ্গে গেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। গাজী তৌহিদ আমাদের হেফাজতে রয়েছে।

ওই তরুণীর ভাই অভিযোগ করেন,  শনিবার রাতে মোবাইল করে তার বোনকে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অফিসে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকদিন ধরে তার বোনকে ধর্ষণ করেছেন চেয়ারম্যান। শনিবার তার বোন চেয়ারম্যানকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে তিনি তাকে তাড়িয়ে দেন। তিনি থানায় গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওই উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ থানায় এ ধরনের কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮,  ২০২৪
এমআরএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।