ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ক্যানেলের পাড় ভেঙে তলিয়ে গেল ৫০ বিঘা জমির ফসল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪
ক্যানেলের পাড় ভেঙে তলিয়ে গেল ৫০ বিঘা জমির ফসল

দিনাজপুর: থৈ থৈ পানি দেখে বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষেত মনে হতে পারে প্রথম দেখায়। অথচ গত কয়েক মাসেও এখানে কোনো বৃষ্টি হয়নি।

শীতকালে বন্যার এমন দৃশ্য দেখা যায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নে।  

এ পানি কোন বন্যার পানি নয়, ইরিগেশন ক্যানেলের পাড় ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫০ বিঘা জমির ফসল। আলু, পেঁয়াজ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল এখন পানির নিচে।  

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের এই ক্যানেলের পাড় ভেঙে চারদিকে পানি ছড়িয়ে পড়ে। এখনও পর্যন্ত জমিতে পানি জমে থাকায় ক্ষতির আশঙ্কায় দিন পার করছেন কৃষকরা।

ফতেজংপুর কাচারিপাড়ার কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, পাড় ভেঙে আমার ছয় বিঘা মাটির ফসল তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে তিন কাঠা জমির পেঁয়াজ, পাঁচ কাঠায় আলু, দেড় বিঘা জমিতে ধান আর বাকি জমিতে ভুট্টা চাষ করছিলাম। সব এখন পানির নিচে আছে। আমরা তো গরিব মানুষ। শুধু আমার নয়, এখানে প্রায় ৫০ বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন তো আমাদের সব শেষ।

একই ইউনিয়নের কামারের মোড় এলাকার কৃষক শাহীন আলম বলেন, ফসলের জমি দেখে মনে হচ্ছে শীতকালে বন্যা হয়েছে। ১৮ কাঠা মাটির সব ফসল এখন পানির নিচে। এই ক্ষতি পূরণ কে দেবে বুঝতেছি না। আমরা তো চাষ করে সংসার চালাই। কর্তৃপক্ষ ঠিক মতো দেখাশোনা করলে এই পাড় ভাঙত না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ খোঁজও নিচ্ছে না আমাদের এতো ক্ষতি হয়ে গেল।

টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে পানি সেচের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ক্যানেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাকিম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এই ক্যানেলে দুর্নীতি চলে আসছে। এতে কোনো সাধারণ মানুষ জড়িত নাই। কর্তৃপক্ষের লোকজনই এতে জড়িত। তারা অবৈধভাবে পাইপ ব্যবহার করে পানি সেচের ব্যবস্থা করে দেয়। এটা নতুন করে না। এই পাড় ভেঙে যাওয়ায় তো আমরা সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

ফতেজংপুর চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা আলমগীর চৌধুরী সোহাগ বলেন, পাড় তৈরির সময় খরচ বাঁচাতে কর্তৃপক্ষ প্রথমে বালু দেয়। তারপর মাটি ভরাট করে। আমরা গিয়ে তখন কাজ বন্ধ করে দেই। তাদের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে এই পাড় ভেঙে গেছে।

কথা হলে নীলফামারী সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সৈয়দপুর পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান অবৈধ পাইপ দিয়ে পানি নেওয়ার কারণে বাধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় কৃষকরা অবৈধভাবে পানি নেওয়া এবং ইঁদুরের গর্তের কারণে ওই বাধ ভেঙে যায়। ঠিকাদার রয়েছে, এতে করে সরকারিভাবে অর্থের ব্যয় হবে না। এতে করে কৃষকের ক্ষতি হবে না দাবি করে বলেন, কৃষকের জমিতে যেসব পানি জমেছে তা নেমে যাচ্ছে। বাঁধ মেরামতের জন্য আমরা দ্রুতই কাজ চালাচ্ছি। সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুতই শুরু করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।