ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হতাশার কিছু দেখি না, সব প্রপাগান্ডা: অর্থমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৪
হতাশার কিছু দেখি না, সব প্রপাগান্ডা: অর্থমন্ত্রী

ঢাকা: ইতিহাসে আজ বাংলাদেশ সর্বোচ্চ স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চলছে, তার সত্যিকার চিত্র তুলে ধরতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এসে দাঁড়িয়েছে।

এ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ বাংলাদেশ সর্বোচ্চ স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের উন্নয়নের সূচকগুলো বাড়ছে। আমাদের অনিশ্চয়তা কিংবা হতাশার কিছু নেই।

সোমবার (০৪ মার্চ) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৪ এর দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, পরিসংখ্যান, পরিকল্পনা বিভাগের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন দেশের ইতিহাসে আমরা সর্বোচ্চ স্থানে এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের উন্নয়নের সূচকগুলো বাড়ছে। আপনারা দেখছেন, আজকে যে ফেব্রুয়ারির রেমিট্যান্স ঘোষণা করা হয়েছে, ২১৬ কোটি ডলার, কাজেই যেটা বলছিলাম, সবগুলো সূচকই বাড়ছে। আমরা তো এখানে অনিশ্চয়তা কিংবা হতাশার কিছু দেখি না। এগুলো প্রপাগান্ডা বা অপপ্রচার করা হচ্ছে, সেটা চলছেই। কিছু হয়নি, বলা হচ্ছে। বিএনপির মহাসচিবও তার জায়গা থেকে একই কথা বলেছেন, তিনি তো কোনো উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন না। তারা এসব কথাই বলে।

তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বলেছিলেন পদ্মাসেতু ভেঙে পড়বে। এগুলো মারাত্মক কোনো সমালোচনা না। এগুলো কীভাবে বলেন! তিনি সিরিয়াসলিই এমন কথা বলেছেন যে আওয়ামী লীগ জোড়াতালি দিয়ে এই ব্রিজ বানিয়েছে, ভেঙে পড়তে পারে—আপনারা উঠবেন না। এগুলো চলছে। ’

মন্ত্রী বলেন, এগুলো থেকে সত্যিকার চিত্র তুলে ধরবেন আপনারা (সাংবাদিক)। তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন—দেশ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এসে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ বাংলাদেশ সর্বোচ্চ স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ যেটা দিয়েছেন, সেই লক্ষ্য ধরে বাংলাদেশ এগোচ্ছে। দেশের যে অব্যাহত উন্নতি এবং মানুষের মধ্যে যে নতুন আশার সঞ্চারণ হয়েছে, এগুলো সব রাস্তায় ঘুরলেই দেখতে পাবেন, মেট্রোরেলে চড়লেই বুঝতে পারবেন যে মানুষ কতটা খুশি ও আশ্বস্ত হয়েছেন, মেট্রোরেলে নারীরা কীভাবে একা চলতে পারেন।

মানুষের মূল উদ্বেগ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতিই মূল উদ্বেগ হয়ে গেলো, আর কিছু না। এটা মূল উদ্বেগ হয় বা-কী করে। এক কোটি লোককে কার্ড দেওয়া হয়েছে। তারা সস্তা দামে পণ্য পাচ্ছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেমন প্রশ্ন করবেন, সেরকম জবাবই পাবেন। ’

ডিসিরা তো মাঠ পর্যায় কাজ করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে তারা কিছু বলেছেন কি না; প্রশ্নে কিছুটা উষ্ণা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি তো বলেছি।

রাজস্ব আদায় করতে ডিসিদের কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সহায়তা করবেন।

এ সময়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, জেলা প্রশাসকদের কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা অর্থমন্ত্রী বলেছেন। সব প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে ডিসিরা কাজ করেন। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে যে ১১টি অগ্রাধিকার দেওয়া আছে, সেগুলোর বিষয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ইশতেহারে যে নির্দেশনা আছে, সেই বিষয়ের কথাগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।

বোরবার (৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে চার দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন-২০২৪ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সম্পর্কিত কার্য-অধিবেশনে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিযোগ্য পণ্য বহুমুখীকরণ, চামড়াজাত শিল্পের উন্নয়ন ও চামড়া রপ্তানির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া, রোজার মাস সামনে রেখে তেল, চিনি ও চালের দাম নিয়ন্ত্রণ, প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করা এবং সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

এবারের সম্মেলনের আলোচ্য সূচিতে থাকছে ৩৫৬ প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনের বিকাশ, আইনকানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২টি প্রস্তাব পড়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে। সম্মেলনে সর্বমোট অধিবেশন ৩০টি। এর মধ্যে কার্য-অধিবেশন ২৫টি (একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, একটি স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় এবং একটি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সদয় নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা দুটি। এছাড়া অংশগ্রহণকারী কার্যালয়: একটি (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)।

এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা, বিভাগীয় কমিশনার ও ডি‌সি‌দের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৪
জিসিজি/এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।