ঢাকা: রমজানের প্রথম দিন। রোদের তীব্রতা বেশ।
পরে কথা হয় তাদের কয়েকজনের সঙ্গে। সকাল আটটার দিকে মাহিন, ইমা, রশিদুলসহ ১০ জন কাজে আসেন। সকাল ৮টা থেকে কাজ করছেন তারা। কাজ মানে হলো কেউ কোদাল দিয়ে মাটি কাটছেন, কেউ টুকরিতে করে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন।
তারা জানান, সবাই ক্লান্ত। একে তো রোজা, তার ওপর তীব্র গরম। মাটি কাটতে কাটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছ তারা। খানিক আগেই চেষ্টা করেছিলেন একটু বিশ্রাম নিতে। সুপারভাইজার কী বলবেন, তাই ভেবে তা পারেননি।
দুপুর একটা বাজলে এক ঘণ্টার জন্য ছুটি পেয়েছেন। অল্প একটু সময় পেয়েই মাটিতে শরীর এলিয়ে দিয়েছেন। এতে অনেকের চোখে এসে গেছে ঘুম। কেউ টুকরি, কেউ গামছা মুড়িয়ে বালিশের মতো রেখেছেন।
তাদের কেউ আবার আমার মাটিতে শুয়েই চোখ বন্ধ করে মাথার কাছে মোবাইলে অল্প শব্দে গান শুনছেন। তবে গানের এ সুর বা স্বর আরেক জনের কাছে যাওয়ার উপায় নেই।
কেউ শব্দ করলে মাথা উঁচু করে চোখ বড় করে তাকান ইমা। সঙ্গে সঙ্গে সব চুপ। ইমা বলেন, ‘ছেলেগুলান গরমের মদ্দি কাজ করতে আইচে। একটু ঘুমাবি তো শব্দ করচে। ’
তিনি ঘুমাচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার কতা বাদ দিউ। উরা সব আমার ভাই, ছেলির মুতন। উরা ঘুমাক। ’
একপাশ দিয়ে চলেছে হাজারো ট্রাক, ভ্যান-রিক্সা, মোটরসাইকেল আর পায়ে হাঁটা মানুষ। আরেক পাশে গির্জা।
মিরপুর সেনপাড়া সড়কের পয়োনিষ্কাশন লাইন সংস্কার করছেন তারা। বছরের অন্য মাস হলে দুপুরের এ সময়টা হতো মধ্যাহ্নভোজের সময়। তবে রোজায় নামাজের সময়। দুপুর দুইটা বাজলেই ঘুম থেকে উঠে কাজ শুরু করবেন তারা।
বিকেল চারটা বাজলে তারা দিনের মজুরি পাবেন ৪০০ টাকা। তা থেকে ইফতারির জন্য খরচ রেখে বাকিটা রেখে দেবেন। সেই টাকা জমিয়ে মেস ভাড়া দেবেন এবং বাড়িতে পাঠাবেন। যদিও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়িতে পাঠানোর অংশটা এবার কমে যাবে।
মাহিন বলেন, ’মজুরি বাড়িনি, খরচ বাড়িছে। রুজায় (রোজা) দুপুরে না খাওয়া লাগলেও ইফতারি কিনায় খরচ একটু বেশি করতে অয়। আবার রাতে একটু ভালো খাওয়ার লাইগি বাড়তি খরচ করতে অয়। চেহেরিতেও (সাহরি) তাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৪
জেডএ/আরএইচ