ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৪৮ জন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৪
ফরিদপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৪৮ জন 

ফরিদপুর: ফরিদপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন হতদরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের ৪৮ জন তরুণ-তরুণী। কোনো ধরনের হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া সোনার হরিণ খ্যাত এই চাকরি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা এসব তরুণ-তরুণী।

এমন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিনামূল্যে চাকরি পেয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) খুশিতে জড়িয়ে ধরে কান্না করেন অনেক অভিভাবক।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেলে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ৪৮ জন তরুণ-তরুণী চাকরি পাওয়ার বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।  

এর আগে বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন। এতে ৪১ জন ছেলে ও সাতজন মেয়ে প্রাথমিকভাবে ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদের জন্য নির্বাচিত হন। পরে রাতেই পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে কনস্টেবল পদে ৪৮ জন উত্তীর্ণকে বরণ করে নেয় ফরিদপুর জেলা পুলিশ।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন প্রমুখ।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া এক তরুণের বাবা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। মানুষের কাছে শুনি এখন সরকারি চাকরি নিতে গেলে টাকা লাগে, লোক লাগে। কিন্তু এখন দেখি সব ধারণা ভুল। মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি হবে কখনও চিন্তাও করিনি। এতো সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে পুলিশের চাকরি পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।




এসব ব্যাপারে জানতে ফরিদপুরের এসপি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, 'স্মার্ট পুলিশ গঠন করার জন্য আমরা যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করেছি। আর এই কার্যক্রম চালু হয়েছিল গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। নিয়োগ বোর্ডের যেসব সদস্য ছিল সবাই একদম স্বচ্ছ ছিল। যারা সুযোগ পেয়েছেন, সবাই যোগ্য প্রার্থী। মাত্র ১২০ টাকায় নিয়োগ পেয়েছেন তারা। কোনো ধরনের সুপারিশ ও লেনদেনের সুযোগ ছিল না এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। ’ 

তিনি আরও বলেন, প্রথমে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য ২ হাজার ১৬২ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছিলেন। তবে এদের মধ্যে থেকে ১ হাজার ৭২৮ জন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন। সেখান থেকে লিখিত পরীক্ষায় বাছাই হয়েছিলেন ৪৭২ জন। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে ১৮৯ জন থেকে মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলে ৪৮ জনকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছি। এদের মধ্যে পুরুষ ৪১ ও নারী সাতজন।

এসপি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমের আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা সম্পূর্ণ তদবিরবিহীন, প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত। তাইতো উত্তীর্ণ সবাই আগামী দিনে ‘সেবার ব্রতে চাকরি’ এই মহান ব্রতে উজ্জীবিত হয়ে, সততা দেশপ্রেম এবং কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখবেন বলে বিশ্বাস করি।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।