বরিশাল: ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ততোই বরিশালের মার্কেট ও শপিংমলগুলো ক্রেতাদের সমাগম বাড়ছে। সেইসঙ্গে ব্যস্ততা বেড়েছে বিক্রেতাদের।
বিক্রেতাদের প্রত্যাশা গত কয়েক বছরে করোনা এবং মানুষের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন নানা বাস্তবতায় এবারের ঈদে ভালো বেচাবিক্রি হবে। আর ক্রেতারা বলছেন, সাধ্যের মধ্যে ভালো মানের পোশাক পেলে কিনতে অনীহা নেই তাদের। আর পোশাকের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত নজরদারি করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বাজার ঘুরে জানা গেছে, বরিশাল নগরের চকবাজার, কাটপট্টি, পদ্মাবতী, গীর্জামহল্লা এলাকাসহ সিটি মার্কেট ও হাজী মহসিন মার্কেটে ১৫ রমজানের পর বেশি ক্রেতা সমাগম ঘটছে। যদিও সদর রোড, বগুড়া রোড, বটতলা, হাসপাতাল রোড, বিএম কলেজ রোড ও পুলিশ লাইন্স রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত শো রুমগুলোতে ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়েছে পয়লা রমজান থেকেই। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বেচাবিক্রি ততোই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর তুলনামূলকভাবে এবারে দেশীয় ব্যান্ডের শো-রুমগুলো এবারের ঈদ বাজার দখলে রেখেছে। তবে নিম্নবিত্তদের ফুটপাত ও ভ্যানগাড়ির মার্কেটেও ক্রেতাদের ভিড় কম নেই।
জানা গেছে, গত তিন বছরে বরিশালে বেশকিছু নামিদামি দেশীয় ব্র্যান্ড তাদের শো-রুম চালু করেছে। ফলে ব্রান্ডের পোশাকের জন্য এখন আর ক্রেতাদের ঢাকায় ছুটতে হয় না। আবার ক্রেতাদের চাহিদা ও রুচির বিষয়টি মাথায় রেখে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ সব বয়সী মানুষের জন্য নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে শো রুমগুলোতে। রমজান শুরুর পর থেকে ক্রেতা সমাগমও বেশ ভালো জানিয়েছেন শো-রুমগুলোর দায়িত্বরতরা।
শো রুমে কেনাকাটা করে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ প্রকাশ করে তন্নী আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, এবারে বরিশালে নতুন অনেক ব্রান্ড তাদের শো-রুম চালু করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভালো যে কোনো ব্রান্ডের শো-রুমে ঢুকলে পরিবারের সবার পোশাক কেনা যায় স্বাচ্ছন্দ্যে। আগের মতো এই দোকান থেকে সেই দোকান ঘুরতে হয় না।
সুমাইয়া নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, দেশীয় ব্রান্ডের সবকিছু অনেক সুন্দর হয়, বিশেষ করে পরিবারের সবার জন্য এক ডিজাইনের মধ্যে পোশাক কেনা যায়। যেমন ছেলে আর বাবার জন্য যে পাঞ্জাবি কিনেছি, আমিও ঠিক সেইম ডিজাইনের থ্রি পিস পেয়েছি সেখানে। এই সুবিধাগুলো পেতে আগে ঢাকায় ছুটতে হতো, আর এখন এখানেই পাচ্ছি এটা ভালো।
বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে জহিরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, এবারে অনেকগুলো শপিংমল নতুন নতুন হইছে। সেই হিসেবে প্রত্যেক জায়গাতেই সুন্দর সুন্দর জামা-কাপড় আসছে।
তবে দামটা বেশি মনে হওয়ায় এই ক্রেতা ঘুরে ঘুরে দেখছেন সবখানে। কারণ পছন্দ আর সাধ্যের সমন্বয়ে যেটা হবে, সেটাই কিনবেন তিনি।
তার মতো বেসরকারি কোম্পানিতে চাকুরিজীবী ফয়সাল হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আবার রমজান মাসের খরচের বিষয় মাথায় রেখে পোশাকে বাড়তি খরচ প্রতিটি মানুষের উপর বাড়তি চাপ। কিন্তু ঈদ হচ্ছে আমাদের সব থেকে বড় উৎসব। আর ঐতিহ্যের সাথে মিশে ঈদে নতুন পোশাক কেনার বিষয়টি। তাই কিছু কিনতে ঈদ বাজারে আসা।
যদিও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাকের দাম ন্যায্যমূল্য রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চকবাজার, কাটপট্টি, পদ্মাপতী, গীর্জামহল্লা ও লাইনরোড ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুর রহিম।
অপরদিকে ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পোশাকে, সাদা পোশাকের পাশাপাশি বিশেষ নজর রাখাসহ নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে বাড়তি ট্রাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৪
এমএস/এসএএইচ