ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘আমি কি আপনার কামলা দেই’ বলায় শিবালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৪
‘আমি কি আপনার কামলা দেই’ বলায় শিবালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি

মানিকগঞ্জ: এক কৃষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সবুজকে দিনাজপুর অঞ্চলে বদলি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবি আহ নূর আহমেদ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বদলির আদেশে দেখা যায়, শিবালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন সুজনকে দিনাজপুর অঞ্চলের অধীন অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। ৩ এপ্রিলের মধ্যে তিনি তার দায়িত্বভার হস্তান্তর করবেন, অন্যথায় ৪ এপ্রিল থেকে তাকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ডরিলিজ) হিসেবে গণ্য করা হবে।

জানা যায়, গত ২ এপ্রিল সকালে শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের গহেরপুর গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান তার ক্ষেতের পোকা ধরা একগুচ্ছ ধান নিয়ে পরামর্শের জন্য কৃষি কার্যালয়ে যান। এসময় তিনি সংশ্লিষ্টদের ধানের ছবি তুলতে বলেন এবং জেলার উপ-পরিচালকের ফোন নম্বর চান। একই সঙ্গে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে যান না বলে অভিযোগ করেন কৃষক ফজলুর। এতে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন সুজন। তিনি ওই কৃষককে বলেন, ‘আমি কি আপনার কামলা দেই? আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন? আপনি বললেই মাঠে যেতে হবে? যা পারেন করেন গা। আপনি বেরিয়ে যান। যদি বয়স্ক লোক না হতেন, তাহলে আপনাকে দেখে নিতাম। ’ একপর্যায়ে তাকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়।  

পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে ওই কৃষককে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারের কাছে যান। এসময় সাংবাদিকদের সামনেই কৃষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তিনিও। সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

শিবালয় উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষক এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। এ ঘটনার দায় দুজনেরই, অথচ কর্তৃপক্ষ শুধু উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সুজনকে বদলি করলেও বহাল তবিয়তে আছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার। এটা আসলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবি আহ নূর আহমেদ বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সুজনকে শাস্তিস্বরূপ দিনাজপুরে বদলি করা হয়েছে। বদলির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে, ভবিষ্যতে বিষয়গুলো দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৪
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।