ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদে বগুড়া মহাসড়কে স্বস্তির যাত্রা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৪
ঈদে বগুড়া মহাসড়কে স্বস্তির যাত্রা

বগুড়া: বগুড়াকে বলা হয়ে থাকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার। এ জেলায় যুক্ত প্রায় ১৪০ কিলোমিটার মহাসড়ক।

এর মধ্যে ঢাকা-বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক ৬৪ কিলোমিটার, বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ৩০ কিলোমিটার ও বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়ক ৪০ কিলোমিটার।

ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে গৃহীত ‘সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক)-২’ প্রকল্পের আওতায় বগুড়া অংশে পড়েছে ৬৪ কিলোমিটার মহাসড়ক। যার বেশিরভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে এবার ঈদযাত্রায় উত্তরের যাত্রীদের ভোগান্তি পোহানোর আশঙ্কা তেমন নেই বলে মন্তব্য করছেন চালকেরা।

সোমবার (০৮ এপ্রিল) বগুড়ার মহাসড়ক ঘুরে ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে আসে।

বগুড়া মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ে দিনে যে সংখ্যক যানবাহন চলাচল করে, ঈদে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে কয়েকগুণ। তবে এবার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া অংশে ঘরে ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বগুড়ায় সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়ররা ছিলেন। পরিদর্শন শেষে উত্তরবঙ্গে কতটুকু স্বস্তিদায়ক হবে সে ব্যাপারে তারা জানান, মহাসড়ক এবার উন্মুক্ত থাকছে এবং অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক রয়েছে। সর্বত্র পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট সতর্ক রয়েছে।

সাসেক-২ সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বগুড়া অংশে কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে কাজ প্রায় বন্ধই ছিল। তবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে আবারও কাজ শুরু হয়। এবার ঈদে বগুড়া মহাসড়ক দিয়ে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। তবে কিছু-কিছু স্থানে সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের সংঙ্গে সম্পৃক্তরা সবাই ঈদযাত্রার কথা মাথায় রেখে নিরলসভাবে কাজ করছেন। বগুড়া অংশে এবার থাকবে না কোনো দুর্ভোগ। ইতোমধ্যেই তারা দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এমন সব এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে দ্রুত কাজ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনার পর মহাসড়কের বগুড়া জেলা সীমানার ৬৫ কিলোমিটার অংশের মধ্যে ৪ থেকে ৫টি পয়েন্টে (উল্লেখযোগ্য- শেরপুর উপজেলার ছোনকা, বগুড়া শহরের প্রবেশমুখ বনানী, শহরের মাটিডালি বিমান মোড়) যানজটের শঙ্কা থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে নির্মাণাধীন ফোর লেনের অনেক স্থান একলেনে গিয়ে মিলিত হয়েছে। সেসব জায়গায় গাড়িগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে না পারায় ধীর গতিতে চলতে হচ্ছে। বগুড়ার চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, শেরপুর বাসস্ট্যান্ড, মির্জাপুর এলাকায় দূরপাল্লার যানবাহনগুলো স্বাভাবিক ভাবেই চলছে।

লয়া মিয়া, জালু শেখ নামে বাস চালকরা বাংলানিউজকে জানান, ঈদ এলেই এ মহাসড়কের কিছু কিছু পয়েন্টে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে যাত্রীসহ তাদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এখন ঈদ যাত্রা শুরু হয়েছে। মহাসড়ক প্রশস্তকরণ কাজ চলমান থাকলেও সৃষ্টি হচ্ছে না যানজটের। স্বাভাবিক গতিতেই চলছে যানবাহন। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে বাড়তি যান চলাচল শুরু হয়েছে। বাসের সংখ্যাও বেড়েছে। তবে নিয়ম মেনে চললে এবার বগুড়ার মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হবে না বলে ধারণা করছেন তারা।

সাসেক-২ প্রকল্পের প্রকৌশলী আহসান হাবীব বাংলানিউজকে জানান, সম্প্রতি বগুড়া অংশের অন্যান্যগুলোর মতো শাজাহানপুর উপজেলার বি-ব্লক ক্যান্টনমেন্ট ওভারপাস, ফুলতলা ওভারপাস, শাজাহানপুরের ফটকি সেতু ও বগুড়া সদরের তিনমাথা মোড়ের তিনমাথা রেল ওভারপাস খুলে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে এবার ঈদ যাত্রায় বগুড়া মহাসড়ক স্বাভাবিক থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হাইওয়ে বগুড়া রিজিয়নের পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বগুড়ার মহাসড়ক দিয়ে উত্তরের পথে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ হাজার ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। ঈদ মৌসুমে এই যানবাহনের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। বগুড়া অংশে চার লেনের ওভারপাসগুলোর কাজ শেষ হওয়ায় এবার ঈদের যানজটের আশঙ্কা নেই বললেই চলে। তারপরেও আকস্মিকভাবে অনেক স্থানে যাত্রায় বিঘ্নতা ঘটতে পারে। তবে এবার আমরা হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা জেলা পুলিশ মহাসড়কে থাকবে। রেকার, চেনগাপ্পা, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও সঙ্গে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।