ঢাকা: শরীয়তপুরের একটি গ্রামে সুন্নতে খতনা করার সময় আট বছরের এক শিশুর লিঙ্গের মুণ্ডুসহ বেশ কিছু অংশ কেটে ফেলেছেন সত্তরোর্ধ্ব হাজাম। শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঈদের তৃতীয় দিন গত ১৩ এপ্রিল সকালে জেলার পালং থানার ওই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় ঢামেক হাসপাতালে।
শিশুটি গ্রামের একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে একটি টেইলার্সে চাকরি করেন। মা-বাবার তিন সন্তানের মধ্যে সে সবার ছোট।
শিশুটির বাবা বলেন, গত ১৩ এপ্রিল সকালে আমার ছেলের খতনা করাতে পাশের গ্রামের ৭০ বছরের হাজামকে ডাকা হয়। সকালে হাজাম এসে খুব তাড়াহুড়ো করতে থাকেন। তার মোবাইল ফোনে একের পর এক কল আসতে থাকে। তার ভাষ্যে, সেদিন আরও দুই শিশুর খতনা করিয়েছেন তিনি। আমার সন্তানের খতনার পর আরও দুজনের খতনা করতে যাবেন বলে তাগাদা দিতে থাকেন। আমরা তাকে বারবার অনুরোধ করি, যেন তাড়াহুড়ো না করেন।
‘আমাদের অনুরোধ না মেনে এই তাড়াহুড়ো করে তিনি আমার ছেলের লিঙ্গের মুণ্ডুসহ অনেকাংশ কেটে ফেলেন। তখন তিনি নিজেই বলতে থাকেন, হায় হায় আমি তো ভুল করে ফেলেছি। পরে আমার সন্তানের ক্ষত জায়গায় ব্যান্ডেজ করে বাড়িতে যাবেন বলে দ্রুত পালিয়ে যান’, বলেন শিশুটির বাবা।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফ উল হক কাজল জানান, শিশুটির লিঙ্গের মুণ্ডুসহ অনেকাংশ কেটে ফেলা হয়েছে। যদি পরিবারের লোকজন কেটে ফেলা অংশটুকু ছয় ঘণ্টার মধ্যে আমাদের কাছে নিয়ে আসতেন, তাহলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সংযুক্ত করার চেষ্টা চালানো যেত। কিন্তু তারা লিঙ্গের কেটে ফেলা অংশ ছাড়াই হাসপাতালে ভর্তি করেন শিশুটিকে। হাসপাতালে ভর্তি করার সঙ্গে সঙ্গেই শিশুটির রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া তার একটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, যেন শিশুটি স্বাভাবিকভাবে মূত্রত্যাগ করতে পারে। ’
শিশুটির ভবিষ্যৎ যৌন জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে জানিয়ে ডা. আশরাফ উল হক বলেন, পরে শিশুটির লিঙ্গে প্লাস্টিক সার্জারির একটা উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেটাও কতটা সফল হবে এখন বলা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জেও খতনা করাতে ১১ বছরের এক শিশুর লিঙ্গ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। এ শিশুটিকেও ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৪
এজেডএস/এইচএ/