ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

২ আসামির জবানবন্দি, যেভাবে খুন পত্রিকাকর্মী শিবু

সিনিয়র করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৪
২ আসামির জবানবন্দি, যেভাবে খুন পত্রিকাকর্মী শিবু দুই আসামি সুমাইয়া আক্তার সুমি ও তাহমিদ আহমদ

সিলেট: সিলেটের দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার কম্পিউটারকর্মী অমিত দাস শিবু (৩৬) হত্যা মামলায় দুই আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন।  

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সিলেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুমাইয়া আক্তার সুমি (২০) ও তাহমিদ আহমদ (২৬)।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সুমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার কালিকচ্ছের (ধরন্তি) মৃত জামাল ভূঁইয়ার মেয়ে এবং তাহমিদ সিলেট নগরের সাগর দিঘীরপাড়ের আব্দুস সালামের ছেলে। তারা সিলেট নগরের আরামবাগ এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা।

হত্যার শিকার শিবু সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার এলেংজুড়ি গ্রামের মৃত গৌর চাঁদ দাসের ছেলে। দুই সন্তানের জনক শিবু সপরিবারে নগরের কানিশাইল এলাকায় বসবাস করতেন।  

তাদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে গত ২৫ এপ্রিল দিবাগত রাতে অমিত দাস শিবুর সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেন সুমি। ঘটনাস্থলে নিয়ে যেতে মেসেজ দেন হোয়াটসঅ্যাপে। সেখানে আগে থেকেই সুমি এলাকার প্রভাবশালী ‘বড়ভাই’ ফয়ছলসহ কয়েকজনকে ঠিক করেন রাখেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহী ঈদগাহ ‍মিনার গেটের নিচে ডেকে নেওয়া হয় শিবুকে। সেখানে আগে থেকে সুমাইয়া আক্তার সুমি অপেক্ষায় ছিলেন। শিবু সেখানে যেতেই সুমি তার মোটরসাইকেলে ওঠেন এবং যান ঘটনাস্থল হাজারীবাগে।  

সেখানে আগে থেকে অপেক্ষা করা ফয়ছলসহ আরও চার-পাঁচজন শিবুকে হেলমেট দিয়ে আঘাত করার পাশাপাশি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর কথিত প্রেমিক তাহমিদকেও ডেকে আনেন সুমি। তিনিও এসে শিবুকে হত্যার মিশনে অংশ নেন। হত্যার পর তারা মরদেহ হুসনাবাদ এলাকায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে রাত আড়াইটার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে বলেন, সুমাইয়া আক্তার সুমি ও তাহমিদ আহমদকে মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠাতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।

এর আগে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত নগরের ঈদগাহ এলাকার হাজারীবাগ থেকে আব্দুল মুকিতের ছেলে ফয়ছল আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফয়ছলের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তিনি কারাগারে রয়েছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সুমি ও তাহমিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৫ এপ্রিল রাত আড়াইটায় নগরের এয়ারপোর্ট থানার শাহী ঈদগাহ এলাকার হাজারীবাগ দলদলি চা বাগান সংলগ্ন মাঠ থেকে অমিত দাস শিবুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল নিহতের বড় ভাই অনুকূল দাস বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৪ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৪
এনইউ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।