ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রিমালে রেহাই পেলেও মোমের আগুনে নিভে গেল তাবাসসুম

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৩ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
রিমালে রেহাই পেলেও মোমের আগুনে নিভে গেল তাবাসসুম আগুনে পুড়ে নিহত শিশু তাবাসসুম

পাথরঘাটা (বরগুনা): ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিধ্বস্ত বরগুনার পাথরঘাটা। চারদিকে পানি আর পানি।

রিমালের তাণ্ডব থেকে বাঁচলেও মোমের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে প্রাণ গেল আড়াই বছরের তাবাসসুমের। মাছ দিয়ে আর ভাত খাওয়া হলো না এ কোমলমতির।  

সোমবার (২৭ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা চরদুয়ানী ইউনিয়নের সহেরাবাদ গ্রামের আব্দুর রহিমের ভাড়া ঘরে আগুন লাগে। আব্দুর রহিমের মেয়ে তাবাসসুম ওই আগুনে পুড়ে যায় প্রাণ হারিয়েছে। আগুন থেকে মেয়ে বাঁচাতে গিয়ে আব্দুর রহিম আহত হয়েছেন। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেননি।

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমনিতেই ঘূর্ণিঝড় রিমালের ছোবলে পাথরঘাটা কয়েক হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি। এমন অবস্থায় এভাবে মৃত্যু মানতে পারছে না এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার দুপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘর পরিদর্শন করেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার বড় মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি।

জানা যায়, তাবাসসুম মাছ দিয়ে ভাত খাবে আবদার করে। মেয়ের আবদার রক্ষায় আব্দুর রহিম ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগম সোমবার রাতে মেয়েকে ঘুমে রেখে পাশে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে মাছ ধরতে যান পার্শ্ববর্তী খালে। কিছুক্ষণ পর পার্শ্ববর্তী এক লোক খবর দেয় ঘরে আগুন লেগেছে। দৌড়ে এসে রহিম দেখেন মেয়ে পুড়ে দগ্ধ৷ আদরের মেয়েকে এভাবে পুড়তে দেখে কোলে নিয়ে রহিম ঝাঁপ দেন পুকুরে। কিন্তু মেয়েকে আর বাঁচাতে পারেননি। আহত আব্দুর রহিম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।  

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মঞ্জু বলেন, আড়াই বছরের মেয়েটির পুড়ে মারা যাওয়ার খবরে শোকের ছায়া নেমেছে পুরো এলাকায়।  

আব্দুর রহিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বলছেন, বাবায় মোর তাজা মাছ দিয়া ভাত খাইতে চাইছিল, এহন কারে খাওয়ামু। মোর বাবায় আর কইবে না মাছের কথা, মজার কথা।

এ ঘটনায় বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বরগুনা-২ আসেন সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার বড় মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি বলেন, এমন মৃত্যু মানা কষ্টকর। তারপরও মেনে নিতে হয়। আমরা এই শোকাহত পরিবারকে সহায়তা দিয়েছি। পাশাপাশি তাদের ঘুরে দাঁড়াতে যাবতীয় দেখভাল আমরা করব।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।