ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ক্যান্সারে আক্রান্ত ফাতেমা, স্বামী প্যারালাইজড: দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
ক্যান্সারে আক্রান্ত ফাতেমা, স্বামী প্যারালাইজড: দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন

নীলফামারী: জেলার ডোমার উপজেলার ছোট রাউতা ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার ও ফাতেমা দম্পতির সাংসারিক জীবন প্রায় ২৮ বছরের। বিয়ের এক যুগেও সন্তানের মুখ দেখেনি তারা।

বরং একের পর এক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা।  

২০১৫ সালে প্রথমে ব্রেস্ট টিউমার হয় ফাতেমার। টিউমারের অপারেশন করার পর ২০১৬ সালে একটি ছেলে সন্তান এবং ২০১৮ সালে একটি কন্যা সন্তান তাদের ঘরে আলোর মুখ দেখায়। ভালোই সময় যাচ্ছিলো তাদের। কিন্তু কোনোভাবেই যেন বিপদ পিছু ছাড়ছে না আনোয়ার ও ফাতেমা দম্পতির।  

২০২১ সালে আবার ক্যান্সার ধরা পরে ফাতেমার। স্ত্রীকে সুস্থভাবে দেখতে আনোয়ার হোসেন নিজের চার বিঘা জমিসহ বাড়ির ভিটের অর্ধেক অংশটুকু বিক্রি করে স্ত্রীর চিকিৎসা চালিয়ে আসছিলেন। আনোয়ার হোসেনের সম্পত্তি না থাকলেও ছোট্ট একটি চায়ের দোকানের আয়ে চলত ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ।  

দুই মাস আগে স্ত্রীর অসুস্থতা ও সাংসারিক চাপে হঠাৎ তিনিও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর প্যারালাইজড হয়ে পড়েন। চিকিৎসা, বাচ্চাদের পড়াশোনা এবং সংসার খরচ মিলে প্রতি মাসে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হয় তাদের।

চিকিৎসার ব্যয় সামলাতে না পেরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও পপি এনজিও থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এদিকে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংক ও এনজিওর চাপে প্রচণ্ড দুরাবস্থায় রয়েছেন তারা। এমতাবস্থায় বাচ্চাদের পড়াশোনা ও স্বামীর চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের নিকট সহযোগিতা চেয়েছেন আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা।

এলাকাবাসী জানান, স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করতে গিয়ে যৎসামান্য কৃষিজমির সম্পূর্ণটুকু সহ বাড়ি ভিটার অর্ধেক শেষ। সঙ্গে ব্যাংক ও এনজিওর ঋণে পর্যুদস্ত। মানসিক চাপের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আনোয়ার হোসেন। এখন পুরো পরিবার বেহাল। মানবেতর পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছেন তারা।

ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম জানান, চিকিৎসার জন্য এককালীন আর্থিক সহযোগিতা বিধান রয়েছে। সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদন পাওয়া মাত্র সহযোগিতা করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন।

স্বামী-স্ত্রীর চিকিৎসা, সংসারের খরচ এবং ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচা চালাতে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তি, সংস্থা-সংগঠনের কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ফাতেমার পরিবার ও এলাকাবাসী। সহযোগিতা জন্য ব্যক্তিগত বিকাশ এবং নগদ নম্বর ০১৯১৫-২৪৬৪৪৯ এ যোগাযোগ ও অর্থ পাঠানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ফাতেমা।

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।