ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: আইনমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: আইনমন্ত্রী ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

ঢাকা: খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, ঢাকায় বিদ্যমান চারটি অর্থঋণ আদালতের পাশাপাশি আরও তিনটি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে।

এছাড়া চট্টগ্রামে আরও দুটি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রয়োজনে আদালত সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

রোববার (৯ জুন) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১৬তম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার সমৃদ্ধ অর্থনীতির শত্রু হিসেবে খ্যাত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায়।  

ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে আরও কার্যকরভাবে অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই মামলার শুনানি পর্যায়ে বিবাদীর অযৌক্তিক কালক্ষেপণ রোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, অর্থঋণ আদালত আইনের ৪৬(৫) ধারা মতে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আদালত, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ব্যাংকার) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিয়মিত সমন্বয় সাধন করা দরকার এবং বাদীপক্ষ বা ডিক্রিদার পক্ষের সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এছাড়া ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ মঞ্জুরির বিষয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ও ঋণ আদায়ে বাদীপক্ষের দায়দায়িত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

আনিসুল হক জানান, বিগত প্রায় সাড়ে ১৫ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়ার ফলেই আজ বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা বেড়েছে। বিচার বিভাগ অনেকটাই আধুনিক ও গতিশীল হয়েছে। বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে আরও বেশকিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম হলো মাদারীপুরের শিবচরে ৩৭ দশমিক ২৭ একর জমির ওপর একটি বিশ্বমানের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠা। এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আশা করছি, এই টাকা দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শেষ করে আগামী অর্থবছরে জুডিসিয়াল অ্যাকাডেমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা সম্ভব হবে। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে কক্সবাজারে একটি বিশ্বমানের রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই ৩ দশমিক ৩৪ একর ভূমি বরাদ্দ দিয়েছেন।

বিচার বিভাগের বাজেট বরাদ্দের বিষয়ে অন্যান্য সরকারের সঙ্গে তুলনা করে আনিসুল হক বলেন, অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বিএনপি-জামায়াত সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আট বছরে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য ব্যয় করেছিল এক হাজার ৬শ ৫০ কোটি টাকা। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কেবল ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দ রেখেছে দুই হাজার ২২ কোটি টাকা। এর বাইরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জন্যও বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৪৮ কোটি টাকা।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক শেখ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৪
এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।