ঢাকা: ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের ‘আত্মসাত’ করা ৪৬ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী।
গত সোমবার (১ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের প্রধান কার্যালয়ে জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের হাতে এই অর্থ ফেরত দেন তিনি।
বুধবার (৩ জুলাই) শ্রমিক ফেডারেশন সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওসমান আলীর চেক জমা দেওয়া এবং তার চেকের একটি ছবিও বাংলানিউজের হাতে এসেছে।
ফেডারেশন সূত্র জানায়, গত ২৩ জুন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলীর বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংগঠনের সভাপতি শাজাহান খান বরাবর আবেদন করেন শ্রমিক নেতারা। এ অভিযোগে ওসমান আলীকে অপসারণ ও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। পরে ওসমান আলীর অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের নির্দেশ দেন শাজাহান খান। তার নির্দেশনা অনুযায়ী গত সোমবার (১ জুলাই) মতিঝিলে শ্রমিক ফেডারেশনের প্রধান কার্যালয়ে বৈঠক করেন সংগঠনটির নেতারা।
ফেডারেশনের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাদিকুর রহমান হিরুর সভাপতিত্বে এই বৈঠকে ওসমান আলীও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ওসমান আলী ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১৭৭৬) ও ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-বি-৪৯৪) কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে প্রমাণিত হয়। ওসমান আলী সংগঠনের টাকা নিজ ব্যাংক হিসাবে রেখেছেন বলে স্বীকারোক্তি দেন। পরে নিজ ব্যাংক হিসাব নম্বর থেকে ৪৫ লাখ ৯৫ হাজার ১৫৪ টাকার একটি চেক সাদিকুর রহমান হিরুর মাধ্যমে ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১৭৭৬) নেতা নূরুল আমিন নূরু ও শহিদুল্লাহ চৌধুরী শাহিনের কাছে হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে জানতে ওসমান আলীর মোবাইল ফোন নম্বরে কল ও মেসেজ দেওয়া হলেও তার সাড়া মেলেনি।
জানা গেছে, ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-বি-৪৯৪) আরও প্রায় অর্ধকোটি টাকার হিসাব বাকি আছে। এখন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে হিসাব-নিকাশ চলছে।
এর আগে গত ২৩ জুন ওসমান আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে শাজাহান খানের কাছে জমা দেওয়া আবেদনটিতে স্বাক্ষর করেছিলেন ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়ন এবং মিরপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এ ছাড়া ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতিও আবেদনে স্বাক্ষর করেন।
আবেদনে বলা হয়, শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব হলো শ্রমিকদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা ও ট্রেড ইউনিয়নের বিধিমালা শ্রমিক সংগঠনকে অবহিত করা। কিন্তু ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন। সেই বিভেদকে পুঁজি করে ঢাকা মহানগরীর শ্রমিক ইউনিয়নের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৪
এনবি/এইচএ/