ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

টায়ার পুড়িয়ে জ্বালানি তেল তৈরি, হুমকিতে পরিবেশ

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
টায়ার পুড়িয়ে জ্বালানি তেল তৈরি, হুমকিতে পরিবেশ

নীলফামারী: নীলফামারীতে পুরোনো টায়ার পুড়িয়ে ফার্নেস অয়েল তৈরির দুইটি কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। ফসলি জমির ওপর গড়ে উঠা কারখানা থেকে বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে।

এতে পরিবেশের ব্যাপক বিপর্যয়ের আশঙ্কাসহ শিশু ও বয়স্করা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন।

ফার্নেস অয়েল হলো এক ধরনের তরল জ্বালানি যা বয়লার গরম করতে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি পাতন প্রক্রিয়ার পরে অপরিশোধিত তেল থেকে প্রাপ্ত একটি অবশিষ্ট জ্বালানি। সৈয়দপুর-রংপুর সড়কের পাশে খিয়ার জুম্মা এলাকায় রাজু আহমেদ নামের এক ব্যক্তি কারখানাটি গড়ে তুলেন।

সূত্র জানায়, পরিবেশ অধিদপ্তর বা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়াই টায়ার জ্বালিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফার্নেস ওয়েল তৈরি করে আসছেন রাজু। এতে ওই এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ফলে ওই কারখানা সংলগ্ন এলাকায় আরও একটি ফার্নেস অয়েল তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। ফলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সৈয়দপুর-রংপুর মহাসড়কের পাশে খিয়ার জুম্মা এলাকায় প্রায় বছর দুয়েক আগে ফার্নেস অয়েল তৈরির কারখানা গড়ে তুলেন রাজু আহমেদ। কারখানায় তিনি কোন তেল উৎপাদন করছেন এবং কার অনুমতিক্রমে ফসিল জমি নষ্ট করে ফার্নেস ওয়েল তৈরি করছেন তার কোনো সাইনবোর্ড নেই। ওই কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের দেখলে মনে হবে কালো ভূত দ্বারা কাজ করানো হচ্ছে। তাদের মুখে নেই কোনো মাস্ক বা শরীরে নেই কোনো সুরক্ষার পোষাক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ফার্নেস অয়েল তৈরির কারখানার মালিকরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস ও ট্রাকে করে টায়ার নিয়ে এসে তৈরি করছেন এক প্রকার কালো তেল। টায়ার পোড়ানো বিষাক্ত ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ওই এলাকার পরিবেশ। টায়ারের ছাই ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে ফসিল জমি ও বসতবাড়িতে। এতে জমির উর্বরতা কমেছে অর্ধেকে।

টায়ার জ্বালিয়ে তেল তৈরিতে কার অনুমতি নেওয়া আছে জানতে চাইলে রাজু আহমেদ বলেন, সব কাগজই আছে। তবে সবাইকে কাগজ দেখানো সম্ভব না। ফসিল জমিতে টায়ার জ্বালিয়ে ফার্নেস অয়েল তৈরির কোনো অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ধিবা রানী বলেন, টায়ার জ্বালিয়ে ফার্নেস অয়েল তৈরির কারখানাগুলোর কি কি কাগজ আছে বলতে পারবো না। তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।

এ ব্যাপারে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, খিয়ার জুম্মা এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে ফার্নেস অয়েল তৈরি করা হচ্ছে তা জানতে পেরেছি কিন্তু এতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে এমন অভিযোগ এখন পর্যন্ত কেউ করেননি। তবে ওই কারখানা কারণে পরিবেশ বা ফসলি জমির ক্ষতি হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।