নীলফামারী: বগুড়ার শেরপুরে গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মজুমদার প্রোডাক্টসের রপ্তানিমুখী পণ্য রাইস ব্র্যান অয়েল কারখানার যন্ত্রাংশ মেরামতকালে বিস্ফোরণ হয়ে চারজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাদের চারজনেরই বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে অফিসার্স কলোনি ও হাতিখানা ক্যাম্প এলাকায়।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে নিহত ইমরান হোসেন ওরফে লাড্ডুর (৩২) বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কান্নার রোল। পরিবারের সদস্য একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীরা তাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য ছুটে এসেছেন। এ সময় সেখানে পরিবারের সদস্য কান্নায় আর আহাজারি দেখে উপস্থিত অনেকেই চোখের পারি ধরে রাখতে পারেনি। ট্যাংক বিস্ফোরণে নিহত লাড্ডু সৈয়দপুর শহরের হাতিখানা ক্যাম্পের মো. খলিলের ছেলে। তারা ৩ ভাই ও এক বোন। লাড্ডু পেশায় একজন অত্যন্ত দক্ষ ট্যাংক মিস্ত্রি ছিলেন। বাবা বৃদ্ধ হয়েছেন। তাই তার আয়েই চলতো পুরো পরিবারটি।
ইমরানের হোসেন লাড্ডুর ছোট ভাই মো. ওমর জানান, এক সপ্তাহ আগে কাজ করতে বগুড়ায় যান তার ভাই ইমরান হোসেন ওরফে লাড্ডু। তার এক সহকর্মী মাধ্যমে প্রথম জানতে পারেন তার ভাই কাজ করা সময় ট্যাংক বিস্ফোরণে মারা গেছেন।
ইমরান হোসেন ওরফে লাড্ডুর মতো নিহত একই এলাকার মৃত সোলেমানের ছেলে সাঈদের (৩৮) বাড়িতেও গিয়েও একই দৃশ্য দেখা যায়। সেখানেও চলছে শোকের মাতম।
সাঈদের ছোট মো. জাহিদ জানান, ইমরান হোসেন ওরফে লাড্ডু ও সাঈদ এক সঙ্গেই কাজের জন্য বগুড়ায় গিয়েছিলেন। একই ঘটনায় নিহত হয়েছেন আব্দুস সালামের ছেলে মো. মনির হোসেন (২৮) ও রুবেল আহমেদ (৩১)। তাদের দুজনের বাড়ি সৈয়দপুর শহরে অফিসার্স কলোনিতে।
শুক্রবার বাদ জুমা জানাজার নামাজের পর তাদের শহরের হাতিখানা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সৈয়দপুর উর্দুভাষী ক্যাম্প উন্নয়ন কমিটির নেতা মো. মোনায়েম জানান, ইমরানসহ নিহত অন্যান্যরা সবাই অত্যন্ত দক্ষ ট্যাংক মিস্ত্রি ছিলেন। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় তারা বড় বড় মিল কারখানায় ট্যাংক মিস্ত্রির কাজ করেন।
একটি সূত্র জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত মজুমদার প্রোডাক্টের রাইস ব্র্যান অয়েল কারখানাটি মেরামতের সময় তা সম্পূর্ণভাবে তেল শূন্য না করায় তা বিস্ফোরিত হয়। মূলত কারখানার মালিক পক্ষের সম্পূর্ণ গাফিলাতির কারণে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪
আরবি