যশোর: মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত কাঠবাদাম গাছটি ঝড়ে উপড়ে পড়েছে। যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ওই কাঠবাদাম গাছটি ছিল।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে। মধুপল্লীর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কবির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদ। এই নদের তীরে কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় ৩০০ বছর বয়সী একটি কাঠবাদাম গাছ। ওই গাছের নামানুসারে স্থানটিকে কাঠবাদাম ঘাট হিসেবে নামকরণ করা হয়।
রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে টানা বৃষ্টির মধ্যে আকস্মিক ঝড়ে ঐতিহ্যবাহী গাছটি নদপাড়ের সড়কের ওপর উপড়ে পড়ে। গাছটি উপড়ে পড়ার খবরে এলাকার মধুভক্ত মানুষ সেটি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
মধুপল্লীতে দায়িত্বরতরা জানান, সারাবছর মধুপল্লীতে আগত কবি ভক্তরা গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে ফটোসেশন করেন। উত্তপ্ত রোদে গাছতলায় বিশ্রামও নেন। আগতরা সেখানে বসে ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে ডাব খায়। কেউ কেউ গাছ থেকে পেড়ে কিংবা তলা থেকে কুড়িয়ে কাঠবাদাম খায়। বিদেশি পর্যটকরা কেউ কেউ কাঠবাদাম কিংবা পাতা কুড়িয়ে কবির স্মৃতি হিসেবে নিয়েও যান।
গাছটি ঘিরে মধুভক্তদের মধ্যে মিথ ছিল, কপোতাক্ষের বাদামতলা ঘাটে মধুসূদন পরিবারের লোকজন স্নান করতেন। কবি গাছটির তলায় বসে কবিতা লিখতেন। এমনকি মধুসূদন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণের পর নদ দিয়ে বজরায় চড়ে এই কাঠবাদাম ঘাটে আসেন। তবে বাবা জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত তাকে বাড়িতে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় গাছটির তলায় তাঁবু টাঙিয়ে ১৪ দিন কাটান মধুসূদন।
যদিও এ প্রসঙ্গে মধুসূদন গবেষক ও কবি খসরু পারভেজ এবং যশোরের ইতিহাস-ঐতিহ্য গবেষক সাংবাদিক সাজেদ রহমান বকুল বলেন, কাঠবাদাম গাছটি বহু পুরাতন এবং ঐতিহ্যবাহী। তবে গাছটি ঘিরে কবিকে নিয়ে প্রচলিত মিথের সঙ্গে বাস্তবতার মিল খুঁজে পায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪
ইউজি/এসএম