ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র তিতু গ্রেপ্তার, জামিন নামঞ্জুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র তিতু গ্রেপ্তার, জামিন নামঞ্জুর

রাজবাড়ী: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর শেখ তিতু (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা।  

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাকে থানা থেকে রাজবাড়ীর ১ নম্বর আমলি আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এ সময় তার পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। পরে পক্ষে-বিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক সুমন হোসেন।

এর আগে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কেরানীগঞ্জের ধলেশ্বরী টোলপ্লাজা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাকে রাজবাড়ী সদর থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।

আলমগীর শেখ তিতু রাজবাড়ী শহরের ২ নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকার মৃত আব্দুল গণি শেখের ছেলে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও মেয়র নির্বাচনের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী কেরামত আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, কাজী ইরাদত আলীর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী রকিবুল হাসান শান্তনু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজিব, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান মিয়া সোহেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহিন শেখ ও রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর শেখ তিতুসহ ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

সদর উপজেলার মাটিপাড়ার কাউরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে ও রাজবাড়ী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র রাজিব মোল্লা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, সারা দেশের মতো রাজবাড়ীতেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। গত ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র, অভিভাবক ও শিক্ষকরা রাজবাড়ী শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান নেন। বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে পূর্ব পরিকল্পনামাফিক উল্লেখিত এজাহার নামীয় আসামিরা দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর নির্দেশে এজাহার নামীয় আসামিরা আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশে বোমা নিক্ষেপ করে ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়। আসামিরা আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেননি। আসামিদের আক্রমণে সোনিয়া আক্তার স্মৃতি, নুরুন্নবী, আশিল ইসলাম অভি, রাজিব মোল্লা, মেহেরাব, আলতাফ মাহমুদ সাগর, উৎস সরকার, রিয়াজসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হয়।

রাজবাড়ী জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট উজির আলী শেখ বলেন, রাজিব মোল্লার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আলমগীর শেখ তিতুকে আদালতে আনলে তার পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। বিচারক সুমন হোসেন তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।