ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খিলগাঁওয়ে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ৫, লুণ্ঠিত মাল উদ্ধার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
খিলগাঁওয়ে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ৫,  লুণ্ঠিত মাল উদ্ধার

ঢাকা: রাজধানীর খিলগাঁওয়ে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে ডাকাতির ঘটনায় আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ।

তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত মালামালের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

নতুন করে গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন- মো. সেলিম (৩৫), আবুল কালাম (২৯), মো. হকসাব (৪৮), মো. হযরত আলী ভূইয়া (৫২) ও মো. বিল্লাল (২৫)।

রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি জানান, গতকাল (৯ নভেম্বর) ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানা এবং কুমিল্লার তিতাস ও চান্দিনা থানা এলাকায় ধারাবাহিক সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত লোহার তৈরি ৩ হাজার ৪৭৫ কেজি ওজনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ (যার মূল্য আনুমানিক ৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা), বিভিন্ন বোল্টের ১০টি ব্যাটারি, দুটি পুরাতন গ্রাইন্ডিং মেশিন, একটি রুফিং মেশিন, একটি সিলিং ফ্যান, দুটি এডজাস্ট ফ্যান ও ৫০ ফুট ইন্টারনেট ক্যাবল উদ্ধার করা হয়েছে।

গত ৯ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে ১১টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের একটি দল খিলগাঁওয়ে অবস্থিত কনস্ট্রাকশন সল্যুশনস নামক একটি প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে প্রবেশ করে। পরে তারা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে কন্টেইনারের ভেতর আটকে রেখে গোডাউনে থাকা তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করে। পরবর্তীতে একটি ট্রাক নিয়ে এসে গোডাউনে থাকা আনুমানিক ২৫ লাখ ১৩ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল, একটি টিভিএস মোটরসাইকেল, গোডাউনের কর্মচারীদের কাছে থাকা এক লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও কর্মচারীদের ১৫টি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির এ ঘটনায় টাকাসহ যেসব মালামাল লুট হয় তার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এ ঘটনায় গত ১১ অক্টোবর খিলগাঁও থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

খিলগাঁও থানা সূত্রে জানা যায়, তদন্তাধীন এ মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত ট্রাকটি শনাক্ত করা হয়। পরে গত ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার পেট্রোবাংলা ভবনের সামনে অভিযান চালিয়ে ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়।  

উদ্ধার ট্রাকের ড্রাইভার মো. সেলিমকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার (৯ নভেম্বর) ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার গাজীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতিতে জড়িত আবুল কালাম ও মো. হকসাবকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ হতে লুণ্ঠিত এডজ্যাস্ট ফ্যান, সিলিং ফ্যান, ইন্টারনেট ক্যাবল, গ্রাইন্ডিং মেশিন ও রুফিং মেশিন উদ্ধার করা হয়।  

গ্রেপ্তার আবুল কালাম ও মো. হকসাবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার কড়িকান্দি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. হযরত আলী ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত এস্কাভেটরের ১০টি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আরো লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের লক্ষ্যে কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার মাধাইয়া বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. বিল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

এ সময় তার কাছ থেকে লুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রকারের লোহার তৈরি পাত, বিম, প্লেটসহ সর্বমোট ৩ হাজার ৪৭৫ কেজি লোহার মালামাল উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ট্রাক ড্রাইভার সেলিম জানান, তিনি তার ট্রাকযোগে ১৫-২০ জনের একটি দলসহ ঘটনার দিন কনস্ট্রাকশন সল্যুশনস নামক প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে প্রবেশ করে। সেখানে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মারধর করে উদ্ধারকৃত মালামাল লুট করে তার ট্রাকে করে দলের সদস্যরাসহ কুমিল্লা জেলার তিতাস থানা এলাকায় চলে যায়। সেখানে গ্রেপ্তার আবুল কালাম ও মো. হকসাব এর কাছে লুণ্ঠিত মালামাল বিক্রি করে। পরবর্তীতে ডাকাতির এসব মালামাল আবুল কালাম ও মো. হকসাব গ্রেপ্তার হযরত আলী ভূইয়া ও মো. বিল্লালের কাছে বিক্রি করে।

এ ডাকাতির ঘটনায় গত ১৫ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে খিলগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রাসেল, মো. মীর হোসেন ও মো. আবুল হাসান নামক তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় লুন্ঠিত একটি মোটরসাইকেল ও একটি কম্পিউটারের সিপিইউ উদ্ধার করা হয়।

ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারদের খিলগাঁও থানার মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেপ্তার সেলিম আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ডাকাতিতে জড়িত অন্যান্যদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।