মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারে ছেলের কুড়ালের আঘাতে বাবার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে ছেলে পলাতক।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বাংলানিউজের কাছে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল কাইয়ূম জানান, এক কোপই দিয়েছে, এ এক কোপেই শেষ। বয়স্ক মানুষ তো। কুড়ালের কোপটা গলার ডানপাশে লেখেছিল।
তিনি আরও জানান, সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মোলভীবাজার মর্গে পাঠানো হয়েছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ছেলের কুড়ালের আঘাতে মামুন মিয়া (৬১) নামে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। রাত ১০টার দিকে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের কলাজুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ছেলের নাম নোমান হোসেন (৩০)।
নিহতের পরিবার সম্পর্কে ওসি জানান, রাজমিস্ত্রি বা রংমিস্ত্রি টাইপের পেশা তাদের। পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
তিনি আরো জানান, মামুনের সঙ্গে এক মেয়ের বিয়ের কথা চলছিল। মেয়ে পক্ষ অতিরিক্ত দেনমোহর দাবি করায় নোমানের বাবা মামুন মিয়া এতে রাজি ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে রোববার রাতে মামুন মিয়ার সঙ্গে তার ছেলে নোমানের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ঘরে থাকা কুড়াল দিয়ে বাবার গলার ডানপাশে আঘাত করেন নোমান। এতে মামুন মিয়া গুরুতর আহত হন। স্বজনরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত ছেলে নোমান হোসেনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। তাকে ধরার জন্য টিম মাঠে কাজ করছে বলে জানান বড়লেখা থানার ওসি।
এ রূপ সামাজিক অবক্ষয় সম্পর্কে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মামুনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এটি অসুস্থ সমাজের একটি নৃশংসতার প্রতিচ্ছবি। বিয়ে সংক্রান্ত পারিবারিক অনুষ্ঠানে যৌতুক, দেনমোহর প্রভৃতি এক প্রকারের অনৈতিক চরম লোভনীয় বিষয়। আমাদের সমাজে অনেক দিন ধরে যৌতুক সংস্কৃতিটা চলে আসছে। আমরা অনেকে লেখাপড়া শিখেও এ গণ্ডি থেকে বের হতে পারিনি। এর থেকে বের হতে আমাদের আরো বেশি করে জনমত বা সচেতনতা তৈরি করতে হবে। গণমাধ্যমে আরো বেশি বেশি যৌতুকবিরোধী প্রচারাভিযান চালাতে হবে।
এর পাশাপাশি কোনো পরিবারের দাদা বা বাবারা যদি এ রূপ প্রথার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তাহলে তাদের দেখাদেখি ওই পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মরাও এ প্রথাকে ঘৃণা করতে শিখবে বলে জানান মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২৪
বিবিবি/আরবি