ঢাকা: সরকারি ক্রয়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য কোটা বাধ্যতামূলক করা, ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা, নিয়মিত বাজেট বরাদ্দসহ দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে ১১৮টি সুপারিশ তুলে ধরেছেন উদ্যোক্তা প্রতিনিধি ও বিশ্লেষকরা।
সম্প্রতি আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এসএমই নীতিমালা তৈরিতে পরামর্শ সভায় এ সুপারিশ করা হয়।
পরামর্শ সভায় সভাপতিত্ব করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নূরুজ্জামান এনডিসি। এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার, ফারজানা খান ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং উপমহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালাম সরদার।
নতুন এসএমই নীতিমালা তৈরিতে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত পরামর্শ সভায় আরো বলা হয়, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের সব সেবা এক দপ্তরের অধীনে এনে ’ওয়ান স্টপ সেবা’ চালু করা জরুরি। এসএমই পণ্য উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম নিশ্চিত করা প্রয়োজন। জেলাভিত্তিক এসএমই পণ্যের ব্র্যান্ডিং-এর লক্ষ্যে এক জেলা এক এসএমই পণ্য উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে জেলাভিত্তিক আলাদা শিল্প পার্ক ও পণ্য বিক্রয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা দরকার।
এসএমইবান্ধব সাব-কন্ট্রাক্টিং বিধিমালা হালনাগাদ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (ইজিপি)-তে নারী-উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, উদ্যোক্তাদের দের সক্ষমতা উন্নয়নে আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির প্রসার ও ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রদান এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।
এছাড়া বাৎসরিকভিত্তিতে জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান নিরূপন, নিয়মিত এসএমই পরিসংখ্যান ও প্রধান প্রধান এসএমই সূচক প্রকাশ করারও সুপারিশ করা হয় পরামর্শ সভায়।
সভায় আরো বলা হয়, এসএমইদের জন্য তুলনামূলকভাবে বৈধ ব্যবসা পরিচালনায় প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রশাসনিক কাজ যেমন: ব্যবসা নিবন্ধন, লাইসেন্স প্রক্রিয়া ও ক্লিয়ারেন্স শর্তাদি সহজ ও নমনীয় করা জরুরি।
সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, এসএমই উদ্যোক্তা, চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, গবেষক, পলিসি বিশ্লেষক, অর্থনীতিবিদগণ অংশগ্রহণ করেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নতুন এসএমই নীতিমালা তৈরির লক্ষ্যে এরই মধ্যে দেশের প্রায় ১০০টি এসএমই উদ্যোক্তা চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন, এসএমই ক্লাস্টার, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছ সুপারিশ গ্রহণ করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
উল্লেখ্য, দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২, এসএমই নীতিমালা ২০১৯, জাতিসংঘের এসডিজি ২০৩০ এবং সরকারের নির্দেশনা অনুসারে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী দেশের প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫,২০২৪
জিসিজি/এমএম