ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রকাশ্যে সরকারি জলমহাল লুট, চেয়ে দেখল পুলিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২৪
প্রকাশ্যে সরকারি জলমহাল লুট, চেয়ে দেখল পুলিশ

সিলেট: সিলেটে ইজারাকৃত একটি সরকারি জলমহাল লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উচ্চ আদালতে রিট পিটিশনে আটকে থাকা ওই জলমহাল থেকে অন্তত ৫০ লাখ টাকার মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (এসিল্যাণ্ড) মোহাম্মদ আলীম উল্লাহ খান রোববার (০৮ ডিসেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

জানা যায়, দক্ষিণ সুরমার শ্রীরামপুর বাইপাস এলাকার সরকারি জলমহাল মেদ্দী বিলে জাল ফেলে ও পলো বেয়ে মাছ লুট করা হয়। শ্রীরামপুর গ্রামের কতিপয় লোকজন এই লুটপাট চালান বলে অভিযোগ করেন ইজারা নেওয়া দিলীপ দাস।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গত ৩০ নভেম্বর থেকে মাছ লুট করে নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন ও মোগলাবাজার থানা পুলিশকে অবহিত করেছি। শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) দিনভর মাছ লুট করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উপরন্তু খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও থামানোর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বিলটি  প্রতি বছর জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা দেওয়া হয়। গত ২ বছর থেকে ইজারা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এই সুযোগে সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় বিএনপির লোকজন বিল থেকে দিনে রাতে মাছ শিকার করে যাচ্ছেন। স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের লোকজন বিলের মাছ শিকার বন্ধে উদ্যোগী হলেও তাদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন।



মৎস্যজীবী দিলীপ আরও বলেন, দুই বছর আগে ১০ লাখ টাকায় মেদ্দী বিলের টেন্ডার হয়। আমরা ছিটা গোটাটিককর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি পে অর্ডারের মাধ্যমে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেই। কিন্তু সোনালী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি উচ্চ আদালতে রিট করে। যে কারণে বিলে মাছ ধরা আটকে আছে। শনিবার শ্রীরামপুর এলাকার কতিপয় লোকজন এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, মামলা চলমান থাকায় জেলা প্রশাসন থেকে বিলটি রক্ষণাবেক্ষণে উপজেলা ভূমি সহকারীকে (এসি ল্যান্ড) দায়িত্ব দেওয়া হয়। শনিবার মাছ লুট করার বিষয়টি প্রশাসন ও থানা পুলিশকে জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মাছ রক্ষায় প্রশাসনের দরজায় বারবার গিয়েছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে প্রশাসনের সামনে সরকারি সম্পদ হরিলুট করল দুর্বৃত্তরা।

সরকারি জলমহাল থেকে মাছ লুটের ঘটনাটি জানতেন না জানিয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসি ল্যান্ড) মোহাম্মদ আলীম উল্লাহ খান বলেন, মাছ লুটের ঘটনা আমাকে কেউ জানায়নি। জানতে পারলে পদক্ষেপ নিতাম। সপ্তাহখানকে আগেও এভাবে মাছ লুটের চেষ্টাকালে লোকজনকে পুলিশ দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়ছল মাহমুদ বলেন, মাছ লুটের বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। কিন্তু লোকজন বেশি থাকায় পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৪
এনইউ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।