ফেনী: ফেনীতে শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যমত প্রকাশ করেছেন বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। সবাই মিলে এক সঙ্গে সহাবস্থান নিশ্চিত ও ফেনীকে নতুনভাবে সাজানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তারা।
নেতারা বলেন, ফ্যাসিস্টদের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছে অনেকে। ওই দলের গুটিকয়েক জনপদকে জিম্মি করে টাকার পাহাড় গড়েছেন। রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এককভাবে সবকিছু চালিয়েছেন। কোনো বিশেষ জায়গা থেকে সব প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন সুস্থ রাজনৈতিক, সামাজিক ভাবধারা ছিল না। মামলা, হামলা, দুর্নীতি ও লুটপাটের চিত্র পেছনে রেখে জঞ্জাল মুক্ত সমাজ গড়তে হবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে সামাজিক সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত করা হোক। বিভিন্ন সেক্টরে নেতৃত্ব দেওয়া মানুষরা ঐক্যবদ্ধ হলে সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
রোববার (০৮ ডিসেম্বর) রাতে ফেনীতে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি) গঠন বিষয়ক সভায় বক্তারা এভাবে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন।
শহরের ডা. সাজ্জাদ হোসেন (ডক্টরস রিক্রিয়েশন ক্লাব) মিলনায়তনে এ সভার আয়োজনে সহযোগিতা করে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ফেনী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক গাজী হাবিব উল্যাহ মানিক ও আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, জামায়াতে ইসলামীর জেলা প্রচার সম্পাদক আ ন ম আবদুর রহীম, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পার্থ পাল চৌধুরী, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি সাংবাদিক শুকদেব নাথ তপন, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন মজুমদার, হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক, খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি মাওলানা সানা উল্যাহ, ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা একরামুল হক, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, পুরোহিত নারায়ন চন্দ্র, নারী নেত্রী কামরুন নাহার মনি, সাংস্কৃতিক সংগঠক সৈয়দ আশরাফুল হক আরমান ও রইসুল ইসলাম রিমন, সবুজ বাংলার নির্বাহী পরিচালক জয়নাল আবদীন রাসেল।
সুজন জেলা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেনের পরিচালনায় গঠনতন্ত্র উপস্থাপন করেন দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী সৈয়দ নাছির উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর খোদেজা বেগম।
সভায় স্থানীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতিগত সহিংসতা নিরসন ও শান্তি- সম্প্রীতি স্থাপনের লক্ষ্যে বক্তারা গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট (টিএইচপি) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের ‘পিস বিল্ডিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিত্বশীল নেতাদের নিয়ে টিএইচপির অনুপ্রেরণায় একটি বহুদলীয় প্লাটফর্মস ‘পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ’ (পিএফজি) গঠিত হয়। যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে স্থানীয় পর্যায়ে শান্তি-সম্প্রীতি ও সহাবস্থান নিশ্চিতকরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। বক্তারা সদর উপজেলায় সহিংসতা নিরসন ও শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপনে কার্যকর ভূমিকা রাখার অঙ্গীকার করেন। শেষে সবার মতামতের ভিত্তিতে মোরশেদ হোসেনকে সমন্বয়কারীসহ ৩০ সদস্যদের পিএফজি গ্রুপ গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২৪
এসএইচডি/আরআইএস