ঢাকা: ‘সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মব জাস্টিস’ প্রতিরোধে সমাবেশ করেছে জাগ্রত বাংলাদেশ (জেবিডি)।
মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাগ্রত বাংলাদেশের সভাপতি আজমুল জিহাদ, সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মামুন।
সমাবেশে জাগ্রত বাংলাদেশের (জেবিডি) সভাপতি আজমুল জিহাদ বলেন, ৭১ ও ২৪-কে হৃদয়ে ধারণ করে একটা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি। তাই অকাতরে জীবন উৎসর্গ করেছি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, ১০০% মানুষের সমান মর্যাদা ও ন্যায্য সুবিধার বাংলাদেশ তৈরির স্বপ্ন নিয়ে। যেখানে শোষণ নিপীড়ন চাঁদাবাজি মব থাকবে না। শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে। কিন্তু আমরা দেখছি তার সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র।
আজমুল জিহাদ আরও বলেন, আমি বলতে চাই—হয় চাঁদাবাজি বন্ধ করেন, নয়তো ট্যাক্স নেওয়া বন্ধ করেন। ট্যাক্সও নেবেন, চাঁদাও নেবেন, দুটি একসাথে চলতে পারে না। হয় সন্ত্রাসী মব বন্ধ করেন, নয়তো আদালত বন্ধ করেন। মব ও আদালত একসাথে চলতে পারে না। সরকারি অফিসগুলোতে হয় ঘুষ বন্ধ করেন, নয়তো বেতন দেওয়া বন্ধ করেন। কারণ ঘুষও নেবেন, বেতনও নেবেন, দুটো একসাথে চলতে পারে না।
জাগ্রত বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন ভূইয়া বলেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আজকে এই পর্যায়ে উপনীত হয়েছি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের পাঠ পরিক্রমায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমরা ২৪ গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করব। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে যে প্রতিবন্ধকতা সামনে এসেছে, সেগুলো হলো—সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মবের মতো ঘৃণ্য কাজ। এই ঘৃণ্য কাজ নির্মূলে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জাগ্রত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মহিউদ্দিন মামুন বলেন, আমরা আশা করেছিলাম বিপ্লবের পরে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও মব-মুক্ত একটি সম্প্রীতির বাংলাদেশ দেখব। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা দেখছি একটি দুর্বল ও পকেট সরকার; চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও মবের বাংলাদেশ।
জাগ্রত নারী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শেখ মহসিনা বুশরা বলেন, আজকে যারা মাঠে ময়দানে, ফুটপাতে, বাসস্টপে, লঞ্চঘাটে প্রকাশ্য চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছেন, নতুন বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের আসন্ন ভোট যুদ্ধে পরাজিত করবে। আর যারা অপরাধ সংগঠনের সময় প্রতিরোধ না করে ভিডিও করেন তারাও সমানভাবে অপরাধী।
জাগ্রত শিক্ষার্থী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন বিজয় বলেন, ২৪-এর আন্দোলনে নিহত ছেলেটি সুন্দর বাংলাদেশের জন্য শহীদ হয়েছে। সেখানে আমরা আজ বিপরীত চিত্র দেখতে পাচ্ছি।
জাগ্রত শিক্ষার্থী বাংলাদেশের সদস্যসচিব জাওয়াদ সাবিত এই চাঁদাবাজির সংস্কৃতিকে ‘নৈরাজ্যের রাজনীতি’ বলে অভিহিত করেন। জাগ্রত শিক্ষার্থী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য স্বাধীন খান বলেন, যতক্ষণ রাজনীতিকে পেশা হিসেবে গ্রহণের প্রবণতা থাকবে এই চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসকে প্রতিহত করা যাবে না।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মব জাস্টিস প্রতিহতে সংহতি জানান জুলাই বিপ্লব পরিষদের সদস্য সচিব মোদাচ্ছের তানভীর এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাকিব হোসেন।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন জাগ্রত বাংলাদেশের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম পাপন, কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট এবিএম জোবায়েরসহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৫
এসসি/এমজেএফ