ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কারণে রাস্তা-দোকানপাটে ফাটল, ঝুঁকিতে ভবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৫
বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কারণে রাস্তা-দোকানপাটে ফাটল, ঝুঁকিতে ভবন

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে ওয়ে হাউজিং নামে একটি কোম্পানির বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক ভেঙে গেছে। একই সঙ্গে পাশে থাকা দুটি দোকান এবং একটি কবরস্থানও বিধ্বস্ত হয়েছে।

 

এ ঘটনায় আশপাশের ভবনগুলো ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।  

এদিকে সড়কে বিশাল ফাটল হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গ্যাস লাইন। গ্যাস সংযোগ বন্ধ হওয়ায় হাজার খানেক পরিবারের রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে।  

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর আগে বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার শাঁখারি পাড়া সড়কে এ ঘটনা ঘটে।  

পৌর কর্তৃপক্ষ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ভেঙে যাওয়া দোকানগুলোর পেছনে একটি পুকুর রয়েছে। হাউজিংয়ের অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ের কারণে মাটির তলদেশে উঠে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভেক্যু দিয়ে সম্প্রতি প্রায় ৩০ ফুট মাটি খুড়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল হাউজিং কোম্পানিটি। এতে পানি উঠে পড়ে নির্মাণাধীন এলাকায়। একপর্যায়ে পানির চাপ বেড়ে রাস্তা দেবে গিয়ে ভেঙে গেছে। পাশের দুটি দোকানও ভেঙে গেছে।  

এছাড়া যুক্তবাংলা আইন পরিষদের সদস্য মরহুম আব্দুল হাকিম উকিলের কবরস্থানও ভেঙে গেছে। এখন ফাটলসহ আশপাশের ভবনগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে।  

ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক শাহিন কাদির রিপন বলেন, অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ের কারণেই মাটি সরে গিয়ে আমার দুটি দোকান ভেঙে গেছে। এতে আমার অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

স্থানীয় ভবন মালিক শামছুল আলম বলেন, নিয়মবহির্ভূত পাইলিংয়ের কারণেই সড়ক দেবে গেছে। পাশের দুটি দোকান ভেঙে গেছে। আমার ভবনটি এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, গ্যাস লাইনে আগুন ধরে যাওয়ার কারণে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগামী রোববার কুমিল্লা থেকে লোকজন এসে মেরামত করবে। কাজ শেষে গ্যাস সংযোগ চালু হবে।  

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল বলেন, ওয়ে হাউজিংকে সাততলা ভবনের অনুমতি দিয়েছি। তারা ১০তলা ভবনের অনুমতি নিয়েছে কি না আমাদের জানা নেই। পাইলিং নিয়ম অনুযায়ীই চলছিল। কিন্তু পাশেই পুকুর থাকায় মাটির নিচ দিয়ে পানি উঠে গেছে। যার কারণে সড়কটি দেবে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এতে সড়ক আর ড্রেনের প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আপাতত তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ ও সড়ক সংস্কার শেষ হলেই কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।  

ওয়ে হাউজিংয়ের এজিএম হাসান আহমেদ বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ীই কাজ করছি। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। আমরা ভবনটি ১০তলা করব। পৌরসভা থেকে সাততলার অনুমোদন রয়েছে। আপাতত ওই সাততলা ভবনই হবে। সড়ক ও দোকান মালিকদের ক্ষতিপূরণ আমরা দিয়ে দেব। সড়কের যেন বেশি ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা মাটি ফেলে প্রাথমিক ব্যবস্থা নিয়েছি।


বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৫
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।