ঢাকা: ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে পাহাড়ীদের ভূমিহীন করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এই সমস্যা সমাধানের জন্য ভূমি কমিশন আইনের পরিবর্তন দাবি করেছে আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন।
শনিবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘রাঙ্গামাটির সহিংসতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মানবাধিকার পরিস্থিতি’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে কমিশন।
একই সঙ্গে গত পাঁচ বছরে ১০টি সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করে এই কমিশন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আদিবাসীদের মৌলিক অধিকার হরণের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ যোগসাজশের অভিযোগের ব্যাপারে কোনো নিরপেক্ষ, নির্ভরযোগ্য তদন্ত দেখা যায়নি। এর ফলে আদিবাসীদের ওপর অবাধে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ঘটেই চলেছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিচারহীনতার কারণে আদিবাসীদের ওপরে হামলা হচ্ছে। স্বাধীন দেশে এই হামলার মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের শক্তি বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা সত্বেও আদিবাসীরা তাদের মৌলিক অধিকার পাচ্ছেন না। এভাবে অধিকারহরণ অব্যাহত রেখে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ধারা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
আদিবাসীদের বাসস্থানে ভূমি অধিগ্রহণ না করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও কমিশনের কো-চেয়ারপার্সন ড. সুলতানা কামাল বলেন, মানুষকে তাদের বাসস্থান থেকে উঠিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। সীমান্ত পাহারার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে শহরেও। যার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেসরকারিভাবে ভূমি দখল চলছে। এই দখলদারদের মধ্যে শুধু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাই নয়, বিভিন্ন স্থানীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তিসহ ভূমিদস্যুরা পাহাড়ীদের হাজার হাজার একর জমি বে-দখল করছে।
সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সমস্যার মূলেই রয়েছে ভূমি সমস্যা। এ সমস্যা থেকে উত্তরনের জন্য ভূমি কমিশন আইনের পরিবর্তন আনতে হবে।
এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে পাহারের শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, উন্নয়মূলক কাজ শুরুর আগে জনমত যাচাই করতে হবে, জনবসতিবহুল এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ বন্ধ করা, পাহাড়ীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পাহাড়ী-বাঙালীর সংমিশ্রনে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠনসহ আট দফার একটি সুপারিশমালা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য স্বপন আদনান, ব্যারিস্টার সারা হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৫