ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বিডিআর হত্যা মামলার আপিল শুনানির বেঞ্চ পুনর্গঠন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫
বিডিআর হত্যা মামলার আপিল শুনানির বেঞ্চ পুনর্গঠন

ঢাকা: বহুল আলোচিত বিডিআর হত্যা মামলায় দায়ের করা সকল ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চটি পুনর্গঠন করা হয়েছে।

বিচারপতি মোঃ শওকত হোসাইনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি মুস্তাফা জামান ইসলামের পরিবর্তে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারকে সদস্য করা হয়েছে।

বেঞ্চের অপর সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিচারপতি মোঃ আবু জাফর সিদ্দিকী।

আপিল শুনানির জন্য পুনর্গঠিত নতুন বেঞ্চের রোববারের (১৮ জানুয়ারি) কার্যতালিকায় রয়েছে পিলখানা হত্যা মামলাটি।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারি রাতে সকল ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ বেঞ্চটি গঠন করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন। গত ৫ জানুয়ারি বসে এ মামলার আপিল শুনানির জন্য ১৮ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেন বৃহত্তর বিশেষ এ বেঞ্চ।

এ মামলার পেপারবুক তৈরি করতে আরো দশ দিন সময় দিয়ে ১৮ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোশাররফ হোসেন সরদার এবং আসামিপক্ষে শামীম সরদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্র্যাজেডিতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা হয়। হত্যা মামলার বিচারিক কাজ শেষে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেন পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার পাশে কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের বিচারিক আদালত। বিস্ফোরক মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম একই আদালতে চলমান রয়েছে।

হত্যা মামলার রায়ে মোট সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৫৭৫ জন। তাদের মধ্যে ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জন পলাতক।

বিশ্বের ইতিহাসে একটি মামলায় সবচেয়ে বেশি আসামির ফাঁসির আদেশের রেকর্ড গড়েছে এ রায়।

এছাড়া বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৬২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৯ জন পলাতক ও কারাগারে আটক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ জন। সব মিলিয়ে পলাতক রয়েছেন দণ্ডপ্রাপ্ত ২৩ আসামি।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা ১৩৮ জনের পক্ষে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল রাষ্ট্রপক্ষ থেকেই দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১২৮ জন এবং বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭৫ জনের পক্ষে অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলামের মাধ্যমে ফৌজদারি আপিল দায়ের করা হয়। অ্যাডভোকেট শামীমের মাধ্যমে ফৌজদারি আপিল দায়ের করা হয় ২৩ জনের পক্ষে। এছাড়া পলাতক এবং মৃত আসামি বাদে বাকি ৮৪ জনের পক্ষে বিভিন্ন আইনজীবীর মাধ্যমে আপিল দায়ের করা হয়।

দ্রুত আপিল শুনানি করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ ব্যবস্থায় সর্বমোট ৩৭ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক (যাবতীয় তথ্যাবলী সম্বলিত বই) প্রস্তুত করা হয়েছে।

এজন্য মোট ১২ লাখ ৯৫ হাজার পৃষ্ঠার ৩৫ কপি ও অতিরিক্ত ২ কপি পেপারবুক তৈরি হয়েছে।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বর্তমানে বিজিবি, তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করেন বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি বিরল কলঙ্কজনক ঘটনা বলে বিবেচিত।

বাংলাদেশ  সময়: ১১৪০ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।