নারায়ণগঞ্জ: ‘কোলে থাকা আড়াই বছরের শিশু শাফিনের গায়ে পেট্রল ঢেলে দেওয়ার কারণে আগুন ধরে যায়। জলন্ত অবস্থায় ছেলেকে নিয়ে বাসের জানালা দিয়ে নিচে লাফ দিই।
রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার সময়ে এভাবেই চিৎকার করে কথাগুলো বলতে থাকেন ডা. শারমিন সিদ্দিকী।
তিনি নিজে পেশায় একজন চিকিৎসক। ওই সময়ে শারমিনের আড়াই বছর বয়সের শিশু শাফিন ও স্বামী ডা. সাইফুল ইসলামেরও চিকিৎসা চলছিল।
এর আগে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের চাষাঢ়ায় সমবায় মার্কেটে বন্ধন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এ তিনজন সহ ১০জন দগ্ধ ও আহত হয়। এ ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে আনা হয় ওই তিনজন সহ অন্যদের।
শাফিনকে যখন ডাক্তাররা চিকিৎসা দিচ্ছিলেন তখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের শয্যায় শুয়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন মা শারমিন সিদ্দিকীও। আগুনে তার শরীরের অনেক স্থানে দগ্ধ হলেও সেদিকে যেন খেয়ালই নাই। বার বার ছেলের চিকিৎসার দিকেই তিনি তাকিয়ে বিলাপ করে কাঁদতে থাকেন।
তিনি বলেন, ‘বাসে আগুন দেওয়ার পর আমাদের এক মুহূর্তও সময় দেওয়া হয়নি। ছেলেকে কোলে নিয়ে আমি বাসের জানালা দিয়ে নিচে লাফ দিতে গিয়ে আমার বাম হাত ভেঙে যায়। কিন্তু তবুও আগুন ধরে যায় শাফিনের গায়ে। জলন্ত আগুন নিয়েই আমি নিচে লাফ দেই। জামা শরীর থেকে খুলতে খুলতেই পুড়ে যায় অনেকাংশ। ’
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, পুলিশ এ ঘটনায় আজিম গাজী নামের একজনকে আটক করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫