ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আগের চেয়ে আন্তরিক মায়ানমার

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আগের চেয়ে আন্তরিক মায়ানমার অ্যান সি. রিচার্ড

ঢাকা: সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে আগের চেয়ে অনেক বেশি আন্তরিক বলে জানিয়েছেন ঢাকা সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী অ্যান সি. রিচার্ড।

বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘শরণার্থীদের বিষয়ে আমেরিকার নীতিমালা বিষয়ক’ এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।



‘ইউএস পলিসি অন রিফিউজি, মাইগ্রেশন অ্যান্ড পপুলেশন ডাইনামিকস’ শিরোনামে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্কিন সহকারী মন্ত্রী জানান, তিন বছর আগে তিনি যখন মায়ানমার সফর করেন, তখন রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের যে মনোভাব ছিল, বর্তমানে তাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে।

তিনি বলেন, মায়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বিশেষ করে দেশটির আরাকান প্রদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন সম্প্রদায়ের মাধ্যমে চালানো আগ্রাসনের ফলে যে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েছেন, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে মায়ানমারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে।

মার্কিন সহকারী মন্ত্রী রিচার্ড বলেন, দেরিতে হলেও মায়ানমার বুঝতে পেরেছে রোহিঙ্গারা তাদের দেশের নাগরিক। তাদেরকে ফেরত নিতে যুক্তরাষ্ট্র মায়ানমারের উচ্চ পর্যারয়ের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে।

মায়ানমার অতি শিগগিরই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মায়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখে কীভাবে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়, সে বিষয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে জানান অ্যানি রিচার্ড।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলমান যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্মীয় সংঘাত ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ নানা কারণে শরণার্থীদের বিষয়টি এখন অনেক দেশেই লক্ষ করা যায়। বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যখন এসব শরণার্থীরা ক্যাম্প ছেড়ে নগর-বন্দর ও লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়েন।

তিনি উদ্বাস্তুদের বিশেষ করে উদ্বাস্তু নারী ও শিশুদের অধিকারের ব্যাপারে আরো আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রায়ই উদ্বাস্তু নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এসব বন্ধ করতে হবে।

গত প্রায় দুই দশক ধরে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান মার্কিন সহকারী মন্ত্রী।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইআইএসএস- এর বোর্ড অব গভনর্স রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ এবং সমাপনী বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক।

অনুষ্ঠানের উম্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি শরণার্থী ও অভিবাসন ইস্যু মানবাধিকার ও মানবিক নিরাপত্তার দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তারা বলেন, বাংলাদেশকে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে হচ্ছে যা, একটি ঘনবসতিপূর্ণ ও অনুন্নত দেশের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন।

অদূর ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থা ও উন্নত দেশের সহযোগিতায় বাংলাদেশ এই শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।

বিআইআইএসএস এমিনেন্ট পারসন্স লেকচার সিরিজের আওতায় এ সেশনে বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত, গবেষক, ও নীতিনির্ধারকরাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।