ঢাকা: মার্কশিট আনতে গিয়ে আমাকে দগ্ধ হতে হলো। আমি তো কোনো সন্ত্রাসী না।
বুধবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢাকেম) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অবজারভেসন ওয়ার্ডে ঝলসে যাওয়া শরীরের যন্ত্রণা নিয়ে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন পিথিরাজ চক্রবর্তী (২০)। তিনি প্রশ্ন রাখেন- কেন তাকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হলো আজ? পড়াশোনা করতে যাওয়াই কি তার অপরাধ ছিল? এর উত্তর আছে কি কারো কাছে!
পিথিরাজ চক্রবর্তী বলেন, কালিয়াকৈরে আমার বোনের বাড়িতে মার্কশিট ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে সেখানে যাই। সন্ধ্যার পর ফিরে আসার সময় বাসে অবরোধকারীরা আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে বাসে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে আমি ও আমার বন্ধু দগ্ধ হই।
মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে গুরুতর দগ্ধ হয় দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র। তাদেরই একজন পিথিরাজ চক্রবর্তী।
তার বাবার নাম চন্দন চক্রবর্তী। তিনি রাজধানীর গাউসিয়া মার্কেটে একটি দোকানের বিক্রয়কর্মী। তার মা’র নাম ঝরনা চক্রবর্তী। তাদের বাসা হাজারীবাগে। পিথিরাজ মোহাম্মাদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞান প্রথম বর্ষের ছাত্র।
এ ঘটনায় দগ্ধ আরেকজন হলেন, রাজিব কর্মকার (২০)। তার মুখ ও দুই হাতের কব্জি পুড়ে গেছে। তার বাবার নাম সুদ্বীপ কর্মকার। তাদের বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। বর্তমানে বাড়ি রাজধানীর হাজারীবাগে। সে মোহাম্মাদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
এ বিষয়ে পিথিরাজ আরও বলেন, আমার শরীর পুড়েছে, যন্ত্রণা কি একমাত্র আমিই অনুভব করছি। আমি লেখাপড়ার জন্য বাইরে বের হয়েছি। কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য না। তবে কেন এই অবস্থা হতে হলো আমাদের। এর বিচার কি পাবো কোনো দিন!
এ ঘটনায় আরও দুইজন দগ্ধ হন। তারাও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। তারা হলেন, নিতাই চন্দ্র সরকার (৩৫) ও আবদুর রশিদ (৩৫)। তাদের মধ্যে আবদুর রশিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫