ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

হরতালে নগরবাসীর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক

কাজী নাজমুল হক ফয়সাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫
হরতালে নগরবাসীর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চলছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল। অথচ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে হরতালের তেমন কোনো প্রভাব পাওয়া যায়নি।



দিনের শেষের দিক কর্মস্থল থেকে ঘরে ফেরা মানুষ ও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হরতালে রাজধানী ঢাকার পরিস্থিতি। হরতালে প্রভাব না থাকলেও আকষ্মিক নাশকতা থেকে জীবনের নিরাপত্তা চান নগরবাসী।

বুধবার (২১ জানুয়ারি) ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের প্রথম দিন বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সরেজমিন রাজধানী ঘুরে দেখা যায় এমন পরিস্থিতি।

হরতাল পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে কথা হচ্ছিল, একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের খামখেয়ালি যখন যা মন চায় তাই করে। জনগণের কথা কেউই চিন্তা করে না। আমাদের তো পেট চালাতে হবে; পরিবার আছে।

তিনি বলেন, ছেলে-মেয়ে আছে। তাদের ভরণপোষণ, পড়াশোনা ইত্যাদির খরচপাতি চালাতে হলে হরতালকে তোয়াক্কা না করেই কর্মের তাগিদে বের হয়েছি। এখন সারাদিন অফিস শেষে বাসায় ফিরছি।

রাকিব আল আজাদ চাকরি করেন একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে।

তিনি বলেন, হরতাল চলছে হরতালের মতো। আর আমরা চলছি আমাদের মতো। আমরা সাধারণ মানুষ হরতালকে পাত্তা দিলে হরতালকারীরা তো আমাদের ঘরে এসে খাবার দিয়ে যাবে না। আমাদের জীবন-যাত্রার ব্যয়ভার আমদেরই বহন করতে হয়।

বর্তমান দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে চরমমাত্রায় রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমরা সাধারণ জনগণ চাই এর একটি স্থায়ী সমাধান। চাই, এটি জাতীয় নির্বাচন দিয়ে হোক বা বিকল্প কোনো উপায়ে।

সুমাইয়্যা আক্তার সালমা বেগম নামে কর্মজীবী এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাস্তা-ঘাটে নামতে ভয় হয়। মনে হয়, জীবনটা ক্ষণিক সময়ের জন্য নিয়ে বের হয়েছি। রাস্তায় মুহূর্তেই পেট্রোল-বোমা, ককটেল বা যে কোনো নাশকতায় অকালে হারাতে হবে জীবন।

তিনি বলেন, মনে হয়, এই বুঝি এতিম হয়ে গেল বাসায় রেখে আসা সন্তানেরা। এত আশঙ্কা, তবুও সন্তান ও সংসারের কথা ভেবে চাকরি রক্ষায় বের হতে হয় কর্মস্থলের উদ্দেশে।

সালমা বেগম জানান, আশা করি, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সাধারণ ও খেটেখাওয়া মানুষগুলোর কথা চিন্তা করবে। দেশের প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে মূল্যায়ন করবে।

তিনি বলেন, রাজনীতিকরা দেশের শান্তি আনয়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন। ভবিষ্যত প্রজন্মের সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষা করবেন।

হরতালে যানবাহন চলাচল পরিস্থিতি নিয়ে পরিবহন শ্রমিক আব্দুল জব্বার জানান, হরতাল চলছে; কিন্তু যাত্রী সংখ্যা স্বাভাবিক রয়েছে। সকাল থেকেই অন্যান্য দিনের মতো যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে।

বাসযাত্রী আরিফ আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, হরতালে এখন আর কিছুই না। যদি হরতালই হতো, তাহলে বাসে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যেতে হতো না। তবে ভয় লাগে, যে কোনো সময় পেট্রোল-বোমা বা ককটেল এসে বাসে বা নিজের মাথায় পড়তে পারে। এ নিয়ে খুবই আতঙ্কে আছি।

জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফ আহম্মেদ বলেন, সরকারি ও বিরোধীদল সবার কাছেই যে কোনোভাবেই আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।