রংপুর: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার হরতাল-অবরোধের সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে, বোরো চাষে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ ও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এছাড়া নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে বলে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন।
তারা অভিযোগ করেন, কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সারের এমন কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সারের সংকটে চলতি মৌসুমে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
ইতোমধ্যে, প্রায় সাড়ে ৩শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। বাকি জমিতেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চারা রোপন করা হবে বলেও কৃষি অফিস জানায়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হলে কৃষকরা এবার ১ লাখ ৭২ হাজার ৫শ মেট্রিক টন ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হবেন।
এদিকে, সারের চাহিদা পূরণে জানুয়ারি মাসে কৃষকদের মধ্যে ১৭৫০ মেট্রিক টন ইউরিয়া, ৩৫০ মেট্রিক টন মিউরেট অব পটাশ, ৩২৫ মেট্রিক টন ডিএপি ও ৫৫০ মেট্রিক টন টিএসপি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের সার ডিলার সৌমী ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আবু তাহের বাংলানিউজকে জানান, হরতাল-অবরোধে পরিবহন সংকটের কারণে সার সরবরাহ ঠিক না থাকায় গুদামের মজুদ সার শেষ হয়ে গেছে। ফলে, কৃষকদের সার দিতে পারছেন না তিনি।
স্থানীয় কৃষক আনিস, পলাশ, হেমায়েত জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সারের জন্য উপজেলার বিভিন্ন ডিলারের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু কারো কাছে সার পাননি। তাই, খোলা বাজার থেকে বেশি দামে তাদের সার কিনতে হচ্ছে।
তারা জানান, প্রতিবস্তা ইউরিয়া (৫০ কেজি) ওজনের নির্ধারিত মূল্য ৮০০ টাকার স্থলে ৯২০ টাকা, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ৭৫০ টাকার স্থলে ৯০০ টাকা, ডিএপি ১২৫০ টাকার স্থলে ১৩৫০ টাকা ও টিএসপি ১১০০ টাকার স্থলে ১২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।
হরতাল অবরোধের কারণে বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দাম বাড়িয়েছে সার ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
কৃষক আফজাল হোসেন জানান, সার ডিলারের কাছে এক বস্তা ডিএপি সার ১৪৮০ টাকা দরে ক্রয় করে তিনি কোনো রশিদ সংগ্রহ করতে পারেন নি।
উপজেলার সার ডিলাররা বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে সার বিক্রি করছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সমীর চন্দ্র ঘোষ জানান, আমাদের জানা মতে কোনো ডিলার বা ব্যবসায়ী সারের দাম বেশি নিচ্ছে না। তাছাড়া সারের দাম ঠিক রাখতে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।
কোনো বিসিআইসি ডিলার কিংবা খুচরা বিক্রেতা সারের দাম বেশি নিলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৫