ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘এখন কী করবো, কী খাবো?’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫
‘এখন কী করবো, কী খাবো?’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কোনাবাড়ী, গাজীপুর থেকে: পোড়া কারখানা থেকে বের হচ্ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলি, পাশেই দাঁড়িয়ে নির্বাক আব্দুল ওয়াহাব। গত পাঁচ বছর ধরে এ কারখানাই ছিল আব্দুল ওয়াহাবের নিজের ও তার পরিবারের রুটি-রুজির উৎস।

কিন্তু চোখের সামনে পুড়ে গেছে কারখানা।

ভাঙা মন নিয়ে তাই নির্বাক আব্দুল ওয়াহাবের মতো শত শত শ্রমিক।

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে সুতা তৈরির এ কারখানায় তিন সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করেন। আগুনে কারখানার মেশিনারি, সুতা, তুলাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে যাওয়ায় বেকার হওয়ার শঙ্কা কাজ করছে এসব শ্রমিকের মাঝে।

শনিবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল সাতটার দিকে গাজীপুর বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় কাদের সিনথেটিক অ্যান্ড কম্পোজিট স্পিনিং মিলে আগুন ধরে। শ্রমিকরা সকালে কাজ করতে গিয়ে আগুন লাগার পর আর কাজে যোগ দিতে পারেননি, আগুন নেভাতে চেষ্টা করেছেন প্রাণপন। পরে যোগ দেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ততোক্ষণে পুড়ে গেছে কারখানার বেশির ভাগ জিনিসপত্র।

কারখানার সামনে দাঁড়িয়ে নিটিং সেকশনের কর্মী আব্দুল ওয়াহাব বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আগুনে শুধু কারখানাই পোড়েনি, পুড়েছে আমাদের কপালও’।

‘এখন কী করবো, কী খাবো?’- বলেও আহাজারি করতে থাকেন তিনি।

নিটিং সেকশনের আরেক কর্মী নিসার উদ্দিন বলেন, হরতাল-অবরোধে এমনিতেই কাজের চাহিদা কম। এরপর আগুন লেগে কারখানা পুড়ে যাওয়ায় তারা নতুন করে আর কাজ পাবেন কি না- তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

সিনথেটিকের অপর ইউনিটে আগুন লাগলেও একটি গুদামে রাখা সুতা ও মেশিনারিজ ছাড়া তেমন ক্ষতি হয়নি।

কারখানার মালিকের নাম শাহাব উদ্দিন বলে জানান শ্রমিকরা। আগুন লাগার পর তিনি আসেননি। উপস্থিত কর্মকর্তারাও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি।

প্রধান ফটকের একজন নিরাপত্তাকর্মী বাংলানিউজকে বলেন, দুই ইউনিটে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করে। আর কারখানার আশেপাশে ভিড় করতে থাকেন এসব শ্রমিক।

এদিকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও থেমে থেমে ভেতরে আগুন জ্বলছে। বিকেলে সিনথেটিকের একটি গুদাম থেকে আগুনের শিখা ও ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখা যায়।  
 
ফায়ার সার্ভিসের ‘স্পেশার ফায়ার ফাইটার টিম’ ছাড়াও ঢাকা, গাজীপুর, কালিয়াকৈর এবং টঙ্গীসহ মোট ১৬টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।  

বিকেলে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান লিটন বাংলানিউজকে বলেন, তুলা ও সুতার মধ্যে আগুন থাকায় নেভাতে সময় লাগছে।

আগুন পুরোপুরি নেভাতে কতোক্ষণ সময় লাগতে পারে- তাও সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

** কোনাবাড়ীতে এখনও জ্বলছে সিনথেটিকের গুদাম
** কোনাবাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আরো সময় লাগবে

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।