ঢাকা: ঝুঁকি ভাতা চান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মত বিনিময় সভায় কর্মকর্তারা ঝুঁকি ভাতা পাওয়ার জোরালো দাবি তোলেন।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন কর্মকর্তাদের।
বৈঠকে উপস্থিত পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
কর্মকর্তারা বলেন, ঝুঁকি ভাতা পেলে কর্মকর্তারা আরও উৎসাহিত হবেন। বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল, এএসআই ও এসআই পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ঝুঁকি ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে।
পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী বক্তব্যেও প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সকল কর্মকর্তার স্তরে ঝুঁকি ভাতা দেয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনী বক্তব্য শেষের পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মত বিনিময় সভা শুরু হয়। মতবিনিময় সভায় দেশের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা নানা সমস্যায় নিয়ে কথা বলেন।
মাঠ পর্যায়ে যানবাহন সমস্যা, জনবল সমস্যা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, নারী পুলিশের ব্যারাক, থানায় নারী পুলিশের পৃথক রুম, কাউন্টার টেরিরিজম, সাইবার ক্রাইম দমানোর জন্য পৃথক ইউনিটসহ প্রযুক্তির নানা সমস্যা নিয়ে কথা বলেন।
কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে দিনে রাতে সমানে ঝুঁকি নিয়েই কর্মকর্তাদের মাঠে থাকতে হচ্ছে। অনেক সময় আক্রান্তও হচ্ছে। কিন্তু কর্মকর্তাদের কোন ঝুঁকি ভাতা নেই। এক্ষেত্রে কর্মকর্তারাও ঝুঁকি ভাতা পেলে আরও উৎসাহিত হবে।
জনবল সমস্যা: পুলিশের সকল কর্মকর্তারাই জনবল সমস্যা বিষয়টি উথ্থাপন করেন। জনবল সমস্যার কারণে পুলিশের সদস্যদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে বলেও জানান কর্মকর্তারাও।
নারীদের জন্য পৃথক ব্যারাক: বর্তমানে নারী পুলিশের জন্য পৃথক কোন ব্যারাক নেই। নারী পুলিশের জন্য পৃথক ব্যারাকের জন্য মতবিনিময় সভায় দাবি করা হয়। পাশাপাশি থানাগুলোতে নারী পুলিশের জন্য পৃথক রুমের দাবিও জানানো হয়।
দেশে যে সাইবার অপরাধ হচ্ছে তাতে করে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে পৃথক ইউনিট গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয় মতবিনিময় সভায়। পাশাপাশি কাউন্টার টেরিরিজম গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন কর্মকর্তারা।
জেলা পর্যায়েও পুলিশের মোবাইল ট্রাকিং ব্যবস্থা আরো সহজতর করার দাবি করা হয়। হাইওয়েতে পুলিশের আরও সরঞ্জাম ও লোকবল বাড়ানোর কথাও বলা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাড়ির অনেক সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে গাড়ি রিকুইজিশন করতে সমস্যা হয়। গাড়ি রিকুইজিশন না করতে তদবিরও আসে। আর এ কারণে যানবাহনের সমস্যা সমাধান করা জরুরি।
এদিকে মতবিনিময় সভা শেষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জনবল সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান করা হবে। সারাদেশে প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার আর পযায়ক্রমে আরও ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগ করা হবে।
পুলিশের যানবাহন সমস্যার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। যানবাহন সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে সরকার।
এছাড়াও সব দাবিই যৌক্তিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল দাবিই পূরণ করা হবে। নারী পুলিশদের পৃথক ব্যারাক স্থাপনের বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ হাসপাতালকে আরও আধুনিক করতে কি কি প্রয়োজন তা নতুন আকারে প্রস্তাবনা দেয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
র্যাবকে আরও আধুনিক করতে যে সকল উপকরণ প্রয়োজন তা পূরণ করা হবে বলেও মন্ত্রী জানান।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন মাঠে প্যারেড পরিদর্শনের মাধ্যমে বর্ণাঢ্য পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকসহ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৫
** দেশের ভাবমূর্তি পদদলিত করছে বিএনপি-জামায়াত
** পুলিশই সাধারণ জনগণের প্রধান ভরসা